চুক্তিভিত্তিক বিয়ের নামে ‘লিভ-ইন’ সম্পর্কে ছড়াচ্ছে সৌদিরা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ক্রমেই চুক্তিভিত্তিক নামমাত্র বিয়ের সংখ্যা বাড়ছে সৌদি আরবে। শর্তহীন এই বিয়ে সৌদি সমাজে ‘মিসইয়ার’ নামে পরিচিত। তবে এই বিয়ে নিয়ে চিন্তিত সৌদির ধর্মীয় ব্যক্তিরা। তাদের অভিযোগ ‘মিসইয়ার’-এর মাধ্যমে আদতে উচ্ছৃঙ্খলতাকেই বৈধতা দান করা হচ্ছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী বিয়ের আগে সহবাস অবৈধ। তবে এই মিসইয়ারের আড়ালে সৌদি ব্যক্তিরা ‘লিভ-ইন’ বা পরকীয়ার মতো সম্পর্কে জড়াচ্ছে। এর জন্য বিশেষ ম্যাচ-মেকিং সাইট বা গ্রুপও আছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। প্রাথমিকভাবে সৌদি সুন্নিদের মধ্যে মিসইয়ার প্রচলন বেশি ছিল।
মিসইয়ার অনুযায়ী মুসলিম বিয়ের রীতি মেনে বিয়ে করা যায়। যেকোনো সময় একে অন্যকে ছেড়ে যেতে পারবেন। তবে এই পুরো বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সৌদি এই বিষয়ে সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে যে বহুবিবাহে আগ্রহীদের জন্যই মিসইয়ার ব্যবস্থা মানানসয়ী।
এদিকে নারীরাও এই ব্যবস্থার মাধ্যমে পুরুষতান্ত্রিক নানা জটিলতা থেকে দূরে থাকতে পারেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই বিয়েগুলোর মেয়াদ ১৪ থেকে ৬০ দিন হয়। যারা বিয়ের পর স্ত্রীর সম্পূর্ণ দায়িত্ব কাঁধে নিতে চান না, তারাই এ ধরনের বিয়েতে বেশি উৎসাহী।
বহুগামী নারী-পুরুষ দ্বিতীয় সংসারের ভার বহন করে বেড়ানোর চাপ এড়িয়ে এই ধরনের সম্পর্কের সুবিধা উপভোগ করে থাকেন। বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা নারীদের মধ্যে এই বিয়ে বেশ জনপ্রিয় বলে জানা গেছে। কার্যত লিভ-ইনের মতো এই সম্পর্ককে হালাল বলে দাবি করেন এক সৌদি কর্মকর্তা।
৪০ বছর বয়সী ওই কর্মকর্তা নিজে মিসইয়ার বন্ধনে আবদ্ধ বলেও জানান। রিয়াদের বাড়িতে তার এক মিসইয়ার স্ত্রী রয়েছেন। তাছাড়া সাধারণ বিয়েও করেছেন তিনি। সেই স্ত্রীর তিন সন্তান রয়েছে। পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেন, তার এক বন্ধুর এরকম ১১ জন গোপন স্ত্রী রয়েছে।
এদিকে সৌদিতে বসাবসরত এক মিসরীয় এই বিষয়ে বলেন, এই বিয়ে খুবই সস্তা। কোনও পণ লাগে না। কোনও বিধি-নিষেধ নেই। মহামারি শুরু হওয়ার পর আমি আমার স্ত্রী ও ৫ বছর বয়সী ছেলেকে কায়ারোতে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। এরপরই আমি মিসইয়ারের সন্ধানে নামি।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০৫ জুলাই, ২০২১)