দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ের নায়ক স্পিনার নাসুম আহমেদের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার হাওরঘেরা দুর্গম জনপদ মধুরাপুরে।


আর নিজ জেলাতেই মাঠে নামতে পারেন না তিনি। আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ তিনি সেখানে।

২০১৫ সালে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা ক্রিকেট কমিটি! যে কারণে ২০১৯ সালে সিলেটে খেলতে পারেননি সুনামগঞ্জের এই কৃতী খেলোয়াড়।

কি ছিল নাসুমের অপরাধ? যে নিজ জেলাতেই অবাঞ্ছিত!

জানা গেছে, সুনামগঞ্জের হয়ে না খেলে সিলেট দলে যোগদানের কারণেই জেলা কমিটির রোষানলে পড়েন নাসুম। এরপর সভা করে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

নাসুমের ওপর এ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সাবেক ক্লাব প্যারামাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনাম আহমদ গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘আমাদের ক্লাবে ২০০৯ সালে ছোট্ট নাসুম বাহাতি ব্যাটসমান হিসেবে সুযোগ পেয়েছিল। আমার তাকে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিতে পারিনি। জেলা ক্রিকেট কমিটিও তাকে তেমন সুযোগ সুবিধা দিতে পারেনি। এ কারণে জাতীয় ক্রিকেট লিগ শুরু হলে সে আমাদের জানায় সুনামগঞ্জ জেলা দলে সুযোগ সুবিধা কম। তাই সিলেট দলে খেলবে। ক্রিকেট নিয়ে তার স্বপ্নের লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য সে সিলেট জেলার হয়ে খেলে। এই কারণে তাকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা আজীবনের জন্য যখন তাকে নিষিদ্ধ করে।’

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সেই বহিষ্কারাদেশের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ক্লাবের কর্মকর্তারা। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।

আর সেই নাসুম তার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। খেলছেন জাতীয় দলের জার্সিতে। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর নায়কও তিনি।

নাসুমের এমন কৃতীত্বে তার সেই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সামনে এসেছে। প্যারামাউন্ট ক্রিকেট ক্লাবে কর্মকর্তাসহ জেলার সাধারণ মানুষ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জোরালো দাবি জানিয়েছেন।

এমন দাবির প্রেক্ষিতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা। তবে নাসুমকে শর্তও জুড়ে দিয়েছে সংস্থাটি।

সুনামগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘বেশি সুযোগ সুবিধা পেয়ে সে সুনামগঞ্জের বদলে সিলেট জেলা দলের হয়ে খেলায় নাসুমকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে এখন যদি সে লিখিতভাবে ভুল স্বীকার করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন করে আমরা আগামী মিটিংয়ে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

প্রসঙ্গত, অস্টেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করেছেন নাসুম। ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেছেন। ফলে সেই ম্যাচে আর দাঁড়াতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের ছোড়া ১৩২ রানের মামুলি টার্গেট পূরণে ১০৮ রানে থেমে যায় অসিরা। ২৩ রানের এই জয়ে ম্যাচসেরা হন নাসুম আহমেদ।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৫আগস্ট, ২০২১)