দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আজ ৮ আগস্ট। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন। বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে দুজন মানুষের অনন্য অবদান চিরকাল অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে তাদের প্রথমটি অবশ্যই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কখনোই জাতির পিতা হয়ে উঠতে পারতেন না যদি বঙ্গমাতা পাশে না থাকতেন।

বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সেই কঠিন সময়ে বঙ্গমাতা ধৈর্য, দৃঢ়তা এবং সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন সেটি বাংলাদেশের ইতিহাসের মোড় পাল্টে দিয়েছিল বলে ইতিহাস বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। বঙ্গমাতা সব সময় ছিলেন নেপথ্যচারিণী। কিন্তু কঠিন সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে তিনি কখনো কার্পণ্য করতেন না। আর সেই বাস্তবতায় বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গমাতা সবসময় আন সাং হিরো হিসেবে থাকবেন। বঙ্গমাতা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম সন্তান শেখ হাসিনা। তিনি এখন জাতির আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। টানা ১২ বছরের বেশি সময় ধরে তার নেতৃত্বে দেশ আজ অগ্রগতি উন্নয়নের মহাসড়কে। বাংলাদেশ এখন সোনার বাংলার সোনার বাংলার দ্বারপ্রান্তে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণাবলী যদি বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা যাবে যে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমন্বয়ে নেতৃত্বে মিশেলে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর ছিলেন অসাধারণ নেতৃত্বে গুণের অধিকারী। ছোটবেলা থেকেই তিনি নেতা হিসেবে নিজেকে বিকশিত করেছিলেন। তিনি একজন জন্মগত নেতা ছিলেন। একজন নেতার যে গুণগুলো থাকা দরকার দূরদর্শিতা, সাহস, মানুষের প্রতি ভালোবাসা -এই তিনটি ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি। আর এ কারণেই তিনি নোবডি থেকে জাতির পিতায় অভিসিক্ত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই নেতৃত্বের গুনটি শেখ হাসিনা পেয়েছেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে সাহসী নেতার নাম শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে কল্যাণকামী নেতার নাম শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সবচেয়ে দূরদৃষ্টি নেতার নাম শেখ হাসিনা। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর তিনটি গুনই তিনি ধারণ করেছেন।

অন্যদিকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন ব্যতিক্রমী, নিভৃতচারী, ধৈর্যশীল এক নারী। তিনি সংকটের সময় উদ্ভাসিত হতেন স্বরূপে। অন্য সময় তিনি ঘরকন্না আর সন্তানদেরকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন। বঙ্গমাতার সবচেয়ে বড় গুণ তার ধৈর্যশীলতা। স্বামী হরহামেশাই জেলখানায় এবং সংসার একা সামলাতে হয়। এসময় অন্য যেকোনো নারী হলেই ভেঙে পড়তেন বা হতাশাগ্রস্ত হতেন। কিন্তু বঙ্গমাতা তা হননি। বরং তিনি একা নিবিড় ভাবে আগলে রেখেছেন তার সন্তানদেরকে, সংসারকে। আর চরম ধৈর্য নিয়ে কঠিন সময়কে পার করেছেন। শুধুমাত্র সংসার সামলানো নয়, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের কঠিন পরিস্থিতি গুলোতে বঙ্গমাতার ধৈর্য, সাহসিকতা ছিলো এক অনন্য দৃষ্টান্ত। বিশেষ করে কঠিন সময় গুলোতে তিনি বঙ্গবন্ধু শুধু পাশেই থাকেন নি, বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছেন প্রেরণা, সাহস এবং সঠিকভাবে পথচলার নির্দেশনা। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যেমন তিনি বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি হতে দেননি, তেমনি তিনি ৭ই মার্চের ভাষণে তিনি অন্যদের কথা না শুনে নিজের মন বিবেক যা বলে সেটি বলতে বলেছিলেন। কখনোই বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী হিসেবে আলাদা অধিকার ফলাননি, শুধুমাত্র নিজের যোগ্যতায়, মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং ধৈর্যের কারণেই তিনি সকলের আপন হয়েছিলেন। সে গুণটি শেখ হাসিনাও পেয়েছেন। আর বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতার সমন্বয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এখন নতুন পথ দেখাচ্ছেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৮আগস্ট, ২০২১)