দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: চিত্রনায়িকা পরীমণি, কথিত মডেল পিয়াসা, মৌ, প্রযোজক রাজ, হেলেনা জাহাঙ্গীর ও মিশুর বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাদের প্রত্যেকের বাসায় তল্লাশি অভিযানে অনেক আলামত জব্দ করা হয়েছে। তাদের ব্ল্যাকমেইলিং, অপরাধ ও অনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম জেনেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ রোববার (৮ আগস্ট) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক।

সম্প্রতি গ্রেফতার আওয়ামী মহিলা লীগের উপ-কমিটি থেকে বহিষ্কার হওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীর, আলোচিত নায়িকা পরীমণি, কথিত মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা, মরিয়ম আক্তার মৌ, প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ ও শরিফুল হাসান মিশুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা গতকাল (শনিবার) একসঙ্গে ছয়জন মূল আসামির বাসায় তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করেছি। কিছু আলামত ও ডিভাইস উদ্ধার করেছি। ল্যাপটপ, ডেস্কটপ পাসপোর্ট, মোবাইল, হার্ডডিস্ক ও ফেরারি গাড়ি জব্দ করেছি। তদন্তের অংশ হিসেবে এই তল্লাশি অভিযান।

তিনি বলেন, আমরা পরীমণি, পিয়াসা, মৌ, রাজসহ প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমরা জব্দ করা আলামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমরা তদন্তের এই পর্যায়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। তবে এই মুহূর্তে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের প্রতারণা, অনৈতিক কার্যক্রম ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মতো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত নানা পেশার অনেক নাম আমরা জেনেছি। এসব যাচাইবাছাই করছি। যাদের নাম এসেছে তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, আমরা যে মামলাগুলো তদন্ত করছি তা প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মাদক সংক্রান্ত। অন্য বিষয়ে তথ্য বা অভিযোগ এলে বা থেকে থাকলেও আমরা আমলে নেব।

সিআইডির হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে থাকা ছয় আসামির বিরুদ্ধেই মাদক রাখা ও পার্টির নামে জিম্মি ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ভিকটিম পাওয়া গেছে কি-না জানতে চাইলে সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো ভিকটিম অভিযোগ করেননি। তবে আমরা বেশ কিছু ভিকটিমের নাম জেনেছি। আমরা পরীমণি ও পিয়াসাদের দ্বারা ব্ল্যাকমেইলের সত্যতা পেয়েছি। পরীমণি-পিয়াসাদের জিজ্ঞাসাবাদে যাদের নাম এসেছে তাদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। কোনো ইনোসেন্ট লোক যাতে ক্ষতি বা মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার না হন সেটিও আমরা বিবেচনায় রেখেছি। পুরোপুরি সত্যতা ছাড়া আমরা কারো নাম ডিসক্লোজ করছি না। যদিও কিছু পত্রিকায় সিআইডির বরাতে নাম আসছে। তবে এসব তথ্য সিআইডি দেয়নি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ওমর ফারুক বলেন, সত্যিকারের ভিকটিমদের আমরা খুঁজছি। তাদের বক্তব্য আমরা শুনব। আমরা পুরোপুরি সত্যতার ভিত্তিতে জড়িতদের আটক করব, জিজ্ঞাসাবাদ করব।

পরীমণির বাসায় তল্লাশি অভিযানে কী জব্দ করা হয়েছে জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন, অনেক কিছুই জব্দ করেছি। তা ফরেনসিক করা হচ্ছে। পরীমণিসহ ৬ আসামির ব্ল্যাকমেইল ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত কাউকে ছাড় দেবে না সিআইডি। তদন্তের স্বার্থে পরীমণিসহ আমাদের হেফাজতে থাকা প্রত্যেক আসামিকে প্রয়োজনে ফের রিমান্ড আবেদন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৮আগস্ট, ২০২১)