দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করা শুরু করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। শহরটির চারপাশ দিয়ে একযোগে রাজধানীতে প্রবেশ করছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে তাদের কূটনীতিকদের দেশটি থেকে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে; কাবুল বিমানবন্দর ও দূতাবাসের সুরক্ষায় নতুন করে সেনাও পাঠিয়েছে তারা।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক ও নাগরিকরা নিরাপদে রয়েছেন বলে জানায় আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

কাতারের দোহায় তালেবানের কার্যালয়ে থাকা এক নেতা রয়টার্সকে বলেন, রাজধানীতে প্রবেশের ক্ষেত্রে যোদ্ধাদের সংঘাত এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ পালিয়ে যেতে চাইলে তাকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে এবং নারীদের সুরক্ষিত এলাকায় স্থানান্তর করা হবে।

তালেবান নেতা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা একজন বেসামরিক আফগানকেও হত্যা বা আহত করতে চাই না। তবে আমরা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করিনি।

অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বিচ্ছিন্ন কিছু গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। তবে কাবুলে কোনো হামলা হয়নি। শহরের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আন্তর্জাতিক মিত্রদের সঙ্গে মিলে কাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

সপ্তাহখানেক আগেও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অনুমান ছিল, আফগানিস্তান সরকার অন্তত তিন মাস কাবুলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবে।

এর কয়েকদিনের মধ্যেই ৩৪টির মধ্যে অন্তত ২২টি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তালেবান পুরো বিশ্বকেই চমকে দেয়। উত্তরাঞ্চলের তালেবানবিরোধীদের ঘাঁটি খ্যাত গুরুত্বপূর্ণ শহর মাজার-ই শরিফ, পূর্বাঞ্চলের জালালাবাদের মতো শহর দখল নিয়ে শরিয়া আইন কায়েম করতে চাওয়া কট্টরপন্থি গোষ্ঠীটি এখন কাবুলের খুব কাছে চলে এসেছে।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী তাদের বাকি সেনাদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর আগুয়ান তালেবান যোদ্ধাদের সামনে সরকারি বাহিনীর প্রতিরোধ ধসে পড়েছে।

সরকার সমর্থক দুই প্রভাবশালী মিলিশিয়া বাহিনীর নেতা আতা মোহাম্মদ নূর ও আবদুল রশীদ দোস্তামও পালিয়েছেন। নূর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, মাজার-ই-শরিফ যে প্রদেশের রাজধানী, সেই বলখ প্রদেশ ষড়যন্ত্র করে তালেবানের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে শনিবার এক বিবৃতিতে তালেবান বলেছে, তাদের একের পর এক অঞ্চল জয়, এটাই দেখাচ্ছে যে জনগণের কাছে তারা কতটা জনপ্রিয়।

তালেবানের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আফগান জনগণ ও বিদেশি সবাই নিরাপদে থাকতে পারবে বলেও আশ্বস্ত করেছে তারা।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৫আগস্ট, ২০২১)