এবার খুলে দেয়া হচ্ছে বান্দরবানের সব পর্যটন কেন্দ্র
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: টানা সাড়ে চার মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর খুলে দেয়া হচ্ছে বান্দরবানের সকল পর্যটন কেন্দ্র। আগামী বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) থেকে জেলার হোটেল-মোটেল রিসোর্টসহ সব পর্যটন কেন্দ্র খোলা থাকবে। সোমবার (১৬ আগস্ট) জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে গত ১ এপ্রিল থেকে বান্দরবানের সকল পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়। আর পর্যটক ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। বন্ধ ছিল বান্দরবানের হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউসসহ সব পর্যটন কেন্দ্র।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে শর্ত সাপেক্ষে ১৯ আগস্টের পর থেকে পর্যটকদের জন্য জেলার সব পর্যটন কেন্দ্র হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউসগুলো খুলে দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকরা পর্যটন কেন্দ্র গুলো ভ্রমণ করতে পারবে, এক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করা হবে। শর্ত মেনে আপাতত সীমিত পরিসরে সব হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস খোলা রাখা যাবে এবং পর্যটন কেন্দ্র গুলোতেও পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারবে।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ১লা এপ্রিল থেকে জেলার সব আবাসিক হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস পরিবহন ও পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। এতে কর্মহীন হয়ে পড়ে পর্যটন সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজারের বেশি শ্রমিক-কর্মচারী। কয়েক শত কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়ে পর্যটনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন নগরী হিসেবে খ্যাত বান্দরবানে রয়েছে ছোট বড় শতাধিক আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে প্রায় কয়েক হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। জেলাতে পর্যটকদের জন্য রয়েছে প্রায় ৪ শতাধিক চাঁদের গাড়ি এসব পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছে ৫ শতাধিক শ্রমিক। লকডাউনের কারণে দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস তারা বেকার জীবন যাপন করেছেন। অনেকে জীবিকার তাগিতে অন্য পেশায় চলে গেছে।
অপরদিকে পরিবহন শ্রমিক নেতা মোজাম্মেল হক বাহাদুর বলেন, লকডাউনে পর্যটন কেন্দ্র, হোটেল-মোটেল বন্ধ থাকায় পরিবহন শ্রমিকরা সম্পূর্ণ বেকার হয়ে পড়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় চলে গেছে। পর্যটন নগরী হওয়ায় ছুটির দিনে বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক বেড়াতে আসে। কিন্তু পর্যটন স্পট বন্ধ থাকায় এ বছর পর্যটকরা আসতে পারছে না। আর পর্যটক না এলে আমাদের গাড়ি বন্ধ থাকে। তাই পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ায় আমরা খুশি। এখন পর্যটক আসবে আমাদের পরিবহন সচল হবে।
বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস পর পর্যটন কেন্দ্রসহ হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস খুলে দেয়া হচ্ছে এ জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র খুললে আশা করি পর্যটকরা বেড়াতে আসবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা তাদের দৈনন্দিন খরচ গুলো অন্তত যোগাড় করতে পারবে। তবে যে ক্ষতি হয়েছে সেটি পুষিয়ে নেয়া আদৌ সম্ভব কিনা নিশ্চিত না।
শৈলকুঠি’র পরিচালক মো. শাফায়েত হোসেন বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস বন্ধ থাকায় কর্মচারীদেরও বিদায় করে দিয়েছি। এতে সঠিক পরিচর্যার অভাবে হোটেলের অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো আবার নতুন করে কিনতে হচ্ছে। প্রতি বছর বন্ধের সময় বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক আসে কিন্তু দুই ঈদে লকডাউন থাকার কারণে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় পর্যটকরা আসতে পারেনি। হোটেল মোটেল বন্ধ থাকায় আমাদেরকে লোকসান গুনতে হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি আবারো পর্যটক আসবে আমরাও ব্যবসা করতে পারব।
জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজী আরও বলেন, সরকারি নিদের্শনায় কিছু শর্ত সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে আগামী ১৯ আগস্টের পর থেকে পর্যটকদের জন্য পর্যটন কেন্দ্রসহ জেলার সব হোটেল মোটেল গেস্ট হাউসগুলো খুলে দেয়া হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকরা পর্যটন কেন্দ্রগুলো ভ্রমণ করতে পারবে এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে পর্যটকেরা ভ্রমণ করতে পারবেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৬আগস্ট, ২০২১)