দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবুবকর সিদ্দিকের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তারা দুজন। এর পর আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

এর আগে ই-অরেঞ্জের গ্রাহক মো. তাহেরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করেন।

মামলার থেকে জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল পণ্য কেনার জন্য ই-অরেঞ্জে অগ্রিম টাকা দেন তাহেরুল ইসলাম। তবে ই-অরেঞ্জ নির্ধারিত তারিখে পণ্য সরবরাহ করেনি। টাকাও ফেরত দেয়নি। নিজেদের ফেসবুক পেজে বার বার নোটিশ দিয়েছে, সময় চেয়েছে। কিন্তু পণ্য ও টাকা দেয়নি। সর্বশেষ তারা গুলশান-১ এর ১৩৬/১৩৭ নম্বর রোডের ৫/এ নম্বর ভবনে অবস্থিত অফিস থেকে পণ্য ডেলিভারির কথা বললেও তারা ডেলিভারি দেয়নি। এছাড়াও তারা যে বিভিন্ন আউটলেটের গিফট ভাউচার বিক্রি করেছিল, সেগুলোর টাকা আটকে রাখায় আউটলেটগুলো ভাউচারের বিপরীতে পণ্য দিচ্ছে না। আমরা এই করোনাকালীন সময় আমাদের কষ্টার্জিত অর্থ পাচ্ছি না, বরং প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা পরিবর্তন নিয়ে নতুন নতুন তথ্য পাচ্ছি। এছাড়াও আজ পর্যন্ত তারা ভুক্তভোগীদের কোনও পণ্য ডেলিভারি না করে এক লাখ ভুক্তভোগীর প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করেছে।

মামলায় অর্থ আত্মসাৎকারী হিসেবে যেসব আসামির কথা উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন- মাসুকুর রহমান, আমানউল্ল্যাহ, বিথী আক্তার, কাউসার আহমেদ, সোনিয়া মেহজাবিনসহ আরও কয়েকজন। মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামিদের প্রত্যেককেই ই-অরেঞ্জের মালিক বলে দাবি করা হয়েছে।

২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ গত বৃহস্পতিবার ফেসবুক পেজে একটি পোস্টের মাধ্যমে অফিস বন্ধ করে কর্মকর্তাদের হোম অফিসের ঘোষণা দেয়। এরপর সোমবার একদল গ্রাহক প্রতিষ্ঠানটির গুলশান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তাদের অনেকে মাশরাফিকে প্রতিষ্ঠানটির সাথে কাজ করতে দেখার পর ই-অরেঞ্জে পণ্যের অর্ডার দিয়েছিলেন তারা।

সোমবার (১৬ আগস্ট) রাতে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, ই-অরেঞ্জের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। চুক্তি অনুযায়ী তাদের সঙ্গে আমার সব ধরনের লেনদেন শেষ। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ছয় মাসের জন্য তাদের সঙ্গে আমার চুক্তি হয়। সেই চুক্তি মেয়াদ জুনে শেষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চুক্তি অনুযায়ী আমার ছয় মাস কাজ করার মধ্যে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। আমার চুক্তি শেষ হওয়ার পরই গ্রাহকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৭আগস্ট, ২০২১)