হাসান আজিজুল হকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত তিন দিন ধরে তিনি স্বাভাবিকভাবেই নিশ্বাস নিচ্ছেন। তাকে আলাদা করে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে না।
হাসান আজিজুল হকের ছেলে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইমতিয়াজ হাসান এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, বাবার শরীরে যেগুলো মূল সমস্যা ছিল, সেগুলো ভালোর দিকে। শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্টগুলোও এখন নরমাল। বর্তমানে তার লিভার, কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তার পরীক্ষা চলছে।
ইমতিয়াজ হাসান বলেন, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাবার ছোটখাটো একটা হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। তবে সে সমস্যা নরমাল হয়ে আসছে। নিউমোনিয়া হয়েছিল, সেটিও ভালোর দিকে। সবমিলিয়ে বাবা আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন।
এর আগে শনিবার (২১ আগস্ট) রাত সোয়া ৮টার দিকে হাসান আজিজুল হককে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ২২০ নম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয়।
ওইদিন সকালে তাকে রাজশাহী থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় এনে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. অধ্যাপক মীর জামালাউদ্দিনের নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল।
বিএসএমএমইউতে ভর্তি হওয়ার পর বিশেষ একটি মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হাসান আজিজুল হকের শারীরিক সমস্যার বিষয়ে ইমতিয়াজ হাসান বাংলানিউজকে জানান, ইলেক্ট্রোলাইট ইম্ব্যালেন্স তার বাবার প্রধান সমস্যা। এছাড়া হার্টের সমস্যা আছে। এছাড়াও পড়ে গিয়ে তিনি কোমরেও আঘাত পেয়েছিলেন। সঙ্গে আছে ডায়াবেটিস।
হাসান আজিজুল হক ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি সেখানে অধ্যাপনা করেন। ১৯৬০-এর দশকে তিনি কথাসাহিত্যিক হিসেবে সুনাম অর্জন করেন তার মর্মস্পর্শী বর্ণনাভঙ্গির জন্য। জীবনসংগ্রামে লিপ্ত মানুষের কথকতা তার গল্প-উপন্যাসের প্রধানতম অনুষঙ্গ।
১৯৭০ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ও ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। সার্বজৈবনিক সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৮ সালে তাকে একটি বেসরকারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধি দেওয়া হয়। ২০০৬ সালে তার প্রকাশিত উপন্যাস ‘আগুনপাখি’, ২০১৩ সালে ‘সাবিত্রী উপাখ্যান’ এবং ২০১৫ সালে প্রকাশিত ‘শামুক’ তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। আর ছোটগল্প ও কথাসাহিত্যের অন্যান্য ক্ষেত্রেও তার অবাধ বিচরণ রয়েছে।
.(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৯ আগস্ট, ২০২১)