পাঞ্জশিরে তালেবান ও প্রতিরোধ যোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: আফগানিস্তানের পাঞ্জশির উপত্যকায় তালেবানের সঙ্গে আহমেদ মাসুদ নেতৃত্বাধীন প্রতিরোধ যোদ্ধাদের তুমুল লড়াই চলছে। উভয়পক্ষের দাবি, গত কয়েক দিনের ওই লড়াইয়ে একে অপরের বহু যোদ্ধাকে হতাহত করেছে তারা। খবর রয়টার্সের।
কয়েকটি এলাকা দখলের দাবি করে তালেবান বলেছে, মাসুদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল রেজিট্যান্স ফ্রন্টের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ফ্রন্টের দাবি, পাঞ্জশির তাদের দখলে আছে। সব প্রবেশদ্বার তারা রক্ষা করতে পেরেছে। তালেবান কয়েকশ যোদ্ধাকে হারিয়েছে।
প্রতিরোধকামী বাহিনী ন্যাশনাল রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট বা এনআরএফ দাবি, পাঞ্জশিরে প্রতিটি প্রবেশদ্বারই তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উল্টো তালেবানের কয়েকশ' সদস্যকে হত্যার দাবি করেছে তারা। একইসঙ্গে গ্রেফতারও করা হয়েছে অর্ধশত তালেবান সদস্যকে।
বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের একমাত্র প্রদেশ পাঞ্জশিরে যা এখনো স্বাধীন রয়েছে। বাকি সবগুলো প্রদেশের গত ১৫ আগস্টের মধ্যে তালেবানের হাতে পতন ঘটেছে।
নিজেদের স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছে এনআরএফ। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে স্থানীয় তালেবানবিরোধী বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছে সরকারি বাহিনীর সদস্যরাও।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর তালেবান সেখানে অভিযান চালাতে শুরু করেছে। তিনি রয়টার্স বার্তা সংস্থার কাছে দাবি করেন, তালেবান মিলিশিয়ারা পাঞ্জশিরে উপত্যকায় ঢুকে পড়েছে এবং কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। কিন্তু পাঞ্জশিরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ন্যাশনাল রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট জানিয়েছে, পাঞ্জশিরে উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তাদের হাতে এবং তালেবানকে তারা হটিয়ে দিয়েছেন। তবে কোনো পক্ষের দাবিই নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি।
আফগানিস্তানের এই অঞ্চলটি বরাবরই তালেবানের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধের জন্য খ্যাত। ১৯৮০ সালের পরে যখন আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়ন যুদ্ধে জড়িয়ে পরে তখনও এই বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন যুদ্ধ ছেড়ে বেড়িয়ে যাওয়ার পর তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে। তবে তালেবানের ৫ বছরের শাসনকালেও তারা পাঞ্জশির দখল করতে পারেনি। পাঞ্জশিরের সিংহ হিসেবে পরিচিত আহমদ শাহ মাসুদ। তিনিই তালেবানের প্রথম শাসনের সময় তাদের হাত থেকে নিজের এলাকাকে বাঁচিয়েছিলেন। শত চেষ্টা করেও সেবার পাঞ্জশির দখল করতে পারেনি তালেবান। আহমদ শাহ মাসুদের সঙ্গে কোনোভাবে না পেরে তাকে হত্যায় নতুন ছক কষে জঙ্গিরা। ২০০১ সালে তালেবানের মিত্রগোষ্ঠী আল কায়েদা এক আত্মঘাতী স্কোয়াড পাঠিয়ে আহমদ শাহ মাসুদকে হত্যা করে। তখন তার ছেলে আহমদ মাসুদ ছিলেন একজন কিশোর। বর্তমানে সেই কিশোরই পাঞ্জশির উপত্যকার প্রতিরোধ বাহিনীর নেতা।
.(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১)