দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করতে চায় সরকার। এর অংশ হিসেবে আগামী ৯ বছরে ৪ কোটি লোককে অক্ষরজ্ঞান দিতে হবে।

সরকারি হিসাব বলছে, দেশে প্রতিবছরই বাড়ছে সাক্ষরতার হার। এরপরও স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে দেশে নিরক্ষর প্রায় ৪ কোটির বেশি মানুষ। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করতে চায় সরকার। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) সেই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।

এমন বাস্তবতায় ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালন হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘লিটারেসি ফর আ হিউম্যান-সেন্টার্ড রিকভারি: ন্যারোইং দ্য ডিজিটাল ডিভাইড’ (মানবকেন্দ্রিক শুশ্রুষার জন্য সাক্ষরতা: ডিজিটাল বিভক্তি হ্রাস’)।

সাধারণত সাক্ষরতা বলতে বোঝায় মাতৃভাষায় পড়তে ও লিখতে পারা, মনের ভাব লেখায় প্রকাশ করতে পারা এবং দৈনন্দিন কাজের হিসাব-নিকাশ করতে পারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে দেশ থেকে নিরক্ষরতার অভিশাপ দূর হবে। এ লক্ষ্যে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো দেশের ৬৪ জেলার নির্বাচিত ২৫০টি উপজেলার (১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী) ৪৫ লাখ নিরক্ষরকে অক্ষরজ্ঞান দিচ্ছে। করোনার কারণে আমাদের কার্যক্রম কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। করোনা সংক্রমণ কমে আসায় আশা করছি আবারও সবকিছু আগের মতোই শুরু হবে।’

সাক্ষরতা প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘সার্বিক সাক্ষরতা প্রকল্প দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম পর্বে প্রায় ২৩ লাখ নিরক্ষরকে অক্ষরজ্ঞান দেয়া হয়েছে। আর বাকি ২১ লাখ নিরক্ষরকে অক্ষরজ্ঞান দেয়ার জন্য আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। আশা করছি আগামী ৬ মাসের মধ্যে এ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।’

দেশে কত মানুষ এখনও নিরক্ষর এমন প্রশ্নে তিনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য দেখার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী (২০২০) বাংলাদেশে বর্তমানে বয়স্ক সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এর মধ্যে সাক্ষর পুরুষ ৭৮ দশমিক ২ শতাংশ আর নারী ৭৩ শতাংশ। সে হিসাব অনুযায়ী এখনও ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ জনগোষ্ঠী নিরক্ষর।

বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৮২ লাখ। সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ হলে প্রকৃতপক্ষে নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪ কোটি ১০ লাখ ৪ হাজার ৮০ জন।

১৯৬৫ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেসকো ৮ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৬৬ সালে বিশ্বে প্রথম আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালন করা হয়। প্রতিবছর দিবসটি উদযাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন দেশের সাক্ষরতা এবং বয়স্ক শিক্ষার অবস্থা তুলে ধরা হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে প্রথম সাক্ষরতা দিবস উদযাপন হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার সাক্ষরতা বিস্তারে দিবসটি পালন করে আসছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১)