জুমার যে আমলে ১০ দিনের গুনাহ মাফ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: জুমার দিনের বিশেষ একটি সময়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি আমলে ১০ দিনের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। অথচ অনেক মানুষই জানা না থাকার কারণে ওই বিশেষ সময়টিতে গল্প-গুজবে লিপ্ত থাকে। ফলে ১০ দিনের গুনাহ থেকে ক্ষমা লাভে বঞ্চিত হয়। মুসলিম উম্মাহর জন্য এটি একটি আফসোস ও দুঃখের বিষয়!
আসুন আমরা জেনে নিই, জুমায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য ১০ দিনের গুনাহ মাফের সেই আমলটি সম্পর্কে-
মসজিদে নীরব থেকে মনোযোগসহকারে ইমামের খুতবা শোনা। মনোযোগের সঙ্গে ইমামের খুতবা শুনলে মহান আল্লাহ ওই বান্দার ১০ দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম। এ আমল সম্পর্কে হাদিসে পাকে এসেছে-
‘হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
مَنْ تَوَضّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ، وَزِيَادَةُ ثَلَاثَةِ أَيّامٍ، وَمَنْ مَسّ الْحَصَى فَقَدْ لَغَا
অর্থ : ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওজু করলো এবং জুমায় এলো। এরপর নীরব থেকে মনোযোগসহ খুতবা শুনলো। আল্লাহ তাআলা তার এক জুমা থেকে অপর জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ মাফ করে দেবেন; আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহও মাফ করবেন। আর যে ব্যক্তি (খুতবা শোনার সময়) নুড়ি স্পর্শ করলো (পাথর নড়াচড়া করলো) সে অনর্থক কাজ করলো।’ (মুসলিম)
অপ্রিয় হলেও সত্য একটি কথা- দেশের প্রায় প্রতিটি মসজিদের চিত্রই এক ও অভিন্ন যে, ইমাম যখন জুমার খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বারে ওঠেন এবং খুতবা দেন; তখন কিছু মানুষ গল্প-গুজবে লিপ্ত হয়। খুতবা শোনার ব্যাপারে একেবারেই বেখেয়াল থাকেন তারা। মূলত গুরুত্বপূর্ণ এ আমলটির ফজিলত ও মর্যাদা না জানার বা না বোঝার কারণে এমনটি হয়ে থাকে। এ থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য আবশ্যক।
খুতবা চলাকালীন সময়ে কোনোভাবেই গল্প-গুজব তো দূরের কথা, অন্য কেউ কথা বললে, তাকে চুপ থাকার কথাও বলা যাবে না। কারণ, ১০ জনের কথা বলা বন্ধ করতে গিয়ে যদি আরো ৫ জন কথা বলে বা ‘চুপ করেন’ শব্দ উচ্চারণ করে তবে ১৫ জন ব্যক্তির আওয়াজ একত্রিত হয়ে অনেক বড় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। হাদিসে পাকে এসেছে-
‘হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
إِذَا قُلْتَ لِصَاحِبِكَ يَوْمَ الجُمُعَةِ: أَنْصِتْ، وَالإِمَامُ يَخْطُبُ، فَقَدْ لَغَوْتَ
অর্থ : ‘ইমাম (যখন) খুতবা দিচ্ছেন- এমন সময় যদি তুমি তোমার পাশের জনকে বলো- ‘চুপ কর’ তাহলে তুমিও অনর্থক কাজ করলে।’ (বুখারি)
সুতরাং খুতবাচলাকালীন সময়ে কোনোভাবেই কথা বলা যাবে না; বরং নীরব থেকে মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনা জরুরি। তবেই মহান আল্লাহ জুমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লির এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং অতিরিক্তি আরো ৩ দিনসহ মোট ১০ দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিন আগে আগে মসজিদে উপস্থিত হয়ে মনোযোগের সঙ্গে ইমামের খুতবা শোনার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ১০দিনের গুনাহ থেকে ক্ষমা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১)