দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ভেবে ড্রোন হামলায় ১০ বেসামরিক আফগান নাগরিককে হত্যার কথা স্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগন। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান ত্যাগের আগ মুহূর্তে রাজধানী কাবুলে ওই ড্রোন হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

সেন্ট্রাল কমান্ডের তদন্তে দেখা গেছে, ২৯ আগস্ট ওই মার্কিন ড্রোন হামলায় একজন ত্রাণ সহায়তা কর্মী ও তার পরিবারের নয় সদস্য প্রাণ হারান। এর মধ্যে সাতজনই শিশু। সবচেয়ে ছোট শিশু সুমাইয়ার বয়স ছিল মাত্র ২ বছর।

সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা ওই ত্রাণ সহায়তা কর্মীর একটি ব্যক্তিগত গাড়ি শনাক্ত করে ড্রোন হামলা চালানোর আট ঘণ্টা আগে। তারা ভেবেছিল, ব্যক্তিগত গাড়িটি আইএস-এর কোনো আত্মঘাতী হামলাকারী।

জেনারেল ম্যাকেঞ্জি ওই ড্রোন হামলাকে ‘মর্মান্তিক ভুল’ মন্তব্য করে বলেন, ওই হামলা চালানোর ঘটনায় তালেবানের থেকে কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেওয়া হয়নি।

দেশত্যাগী মানুষের ঢলের মধ্যে গত ২৬ আগস্ট বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ ১৭০ আফগান নিহত হন। ভয়াবহ ওই হামলার দায় স্বীকার করে আইএসের আফগানিস্তান শাখা আইএস-কেপি। এরপর আইএসকে লক্ষ্য করে আফগানিস্তানে ড্রোন হামলা চালানোর কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

গত ২৯ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় কাবুল বিমানবন্দরের পাশে ড্রোন হামলার ঘোষণা দেয় মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ ও ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’র অনুসন্ধানে হামলায় নিহত ওই গাড়িচালকের পরিচয় তুলে ধরা হয়।

তার নাম জেমারি আহমাদি। ৪৩ বছর বয়সী এই ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার আফগানিস্তানে ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক সংস্থা নিউট্রিশন অ্যান্ড এডুকেশন ইন্টারন্যাশনালে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করতেন।

আহমাদি ও তার পরিবারের আরেক সদস্য যিনি মার্কিন সেনাদের কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করেছিলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী হিসেবে আবেদন করেছিলেন।

আহমাদির পরিবার ও সহকর্মীদের তথ্য অনুযায়ী, যে সাদা সেডান আহমাদি চালাতেন, সেটি নিউট্রিশন অ্যান্ড এডুকেশন ইন্টারন্যাশনালের।

আহমাদির স্বজনদের দাবি, আহমাদি আঙিনায় পৌঁছালে তার ও ভাইয়ের ছেলেরা বের হয়ে আসে এবং গাড়িতে চড়ে বসে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১)