এবার দাড়ি কাটায় তালেবানের নিষেধাজ্ঞা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: নাপিতদের কারও দাড়ি কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তালেবান। আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
তালেবান নেতারা বলছেন, এতে তাদের বর্ণিত শরিয়াহ আইনের লঙ্ঘন হয়। তালেবানের ধর্মীয় পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, কেউ এ নিয়ম ভঙ্গ করলে শাস্তি পেতে হবে। কাবুলে কর্মরত কয়েকজন নাপিতও জানিয়েছেন তারাও একই ধরনের নির্দেশনা পেয়েছেন।
আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তালেবান উদার শাসন নীতির প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে নতুন এ নির্দেশনায় তাদের পূর্বের মেয়াদের মতো কঠোর শাসনের ইঙ্গিত দেখছেন অনেকেই।
গত মাসে ক্ষমতা দখলের পর বিরোধীদের কঠোর সাজা দিয়েছে তালেবান। গত শনিবার হেরাত প্রদেশে অপহরণের অভিযোগে চার জনকে গুলি করে হত্যা করে মরদেহ রাস্তায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
দক্ষিণাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশের সেলুনগুলোতে টানিয়ে দেওয়া নোটিশে নাপিতদের সতর্ক করে বলা হয়েছে চুল বা দাড়ি কাটার সময়ে শরিয়াহ আইন অনুসরণ করতে হবে। এতে বলা হয়েছে, ‘এ নিয়ে কারো অভিযোগ করার অধিকার নেই।’
কাবুলের এক নাপিত বলেন, ‘যোদ্ধারা প্রায়ই আসছে আর আমাদের দাড়ি কাটা বন্ধ করার আদেশ দিচ্ছে। তাদের একজন আমাকে বলেছে তারা আমাদের ধরতে ছদ্মবেশে আসতে পারে।’
কাবুলের অন্যতম বড় একটি সেলুনের এক কর্মী জানান তাকে সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন করা হয়েছে। সেখানে তাকে ‘আমেরিকান স্টাইলে’ চুল-দাড়ি কাটতে নিষেধ করা হয়েছে। আর কারোর দাঁড়ি ছাটা বা শেভ করতেও নিষেধ করা হয়েছে।
তালেবানের প্রথম সরকারের আমলে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে নকশাদার চুল কাটা নিষিদ্ধ করা হয়। আর পুরুষদের দাড়ি রাখতে উৎসাহিত করা হয়। তবে তালেবানের পতনের পর আফগানিস্তানে পুরুষের ক্লিন শেভ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে আর বহু আফগান পুরুষ সেলুনে গিয়ে নানা স্টাইলে চুল কাটিয়ে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নাপিত জানিয়েছেন, তালেবানের নতুন নিয়মের কারণে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই আমার সেলুনে অল্প বয়সীরা তাদের ইচ্ছামতো শেভ করে। এ ব্যবসা চালানোর কোনো উপায় নেই।’
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ফ্যাশন সেলুন ও নাপিতগিরি নিষিদ্ধ ব্যবসায় পরিণত হচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে এটিই আমার কাজ আর কখনো ভাবিনি এটি চালিয়ে যেতে পারব না।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১)