স্টুডেন্ট ভাড়া দিতে চাওয়ায় মারধরে রক্তাক্ত ঢাবি শিক্ষার্থী!
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বাসে ‘স্টুডেন্ট ভাড়া’ দিতে চাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর রামপুরা থানা এলাকায়।
ভুক্তভোগীর নাম রাফিয়া তামান্না। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার অভিযোগ, শান্তিনগর থেকে ‘তরঙ্গ প্লাস’ বাসে বাসায় ফেরার পথে হেলপারের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার (০৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায়। ঢাকা মেট্রো ব- ১৫৭৭৭ নম্বরধারী তরঙ্গ প্লাস বাসের হেলপারের বিরুদ্ধেই জিডি করেন তামান্না। ঘটনার পরদিন শুক্রবার (০৮ অক্টোবর) ঢাবি প্রক্টরের হস্তক্ষেপে ওই হেলপারকে থানায় এনেছিলো রামপুরা থানা পুলিশ। পরে এ ঘটনায় মামলা দায়ের না হওয়ায় তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছে তারা।
ঢাবির এই শিক্ষার্থী ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
তামান্নার দায়ের করা জিডি বিষয়ের স্থানে উল্লেখ করা হয়, ‘তরঙ্গ প্লাস’ বাসের অজ্ঞাতনামা কন্ডাক্টরের অসদাচরণ এবং গায়ে হাত তোলার বিষয়ে এ অভিযোগপত্র।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাফিয়া তামান্না বলেন, ‘সন্ধ্যা ৭টার দিকে শান্তিনগর থেকে তরঙ্গ প্লাস বাসে করে আমি বাসায় ফিরছিলাম। শুরু থেকেই বাসের হেলপার স্টুডেন্ট ভাড়া নিয়ে ঝামেলা শুরু করে। আমি প্রতি চেক পোস্টে স্টুডেন্ট হিসেবে হাত তুলে চেকারকে আইডি কার্ড দেখানোর চেষ্টা করি।’
রাফিয়া বলেন, ‘চেকারকে আইডি কার্ড দেখানোর চেষ্টা করেছি দেখে ওই হেলপার আমার উদ্দেশে নানা ধরনের মন্তব্য করতে থাকে। বাস থেকে নেমে যাওয়ার আগে সে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে- পরেরবার এই বাসে উঠলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে। হুমকি দেওয়ার পর বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ওই হেলপারকে থাপ্পড় দিই আমি। তখন সেও আমাকে কয়েকবার থাপ্পড় ও নাকে ঘুষি দেয়। ফলে আমার নাক থেকে রক্ত বের হতে থাকে, হাতের আঙুলও কেটে যায়।’
রাফিয়া অভিযোগ করেন, পরে বাস থেকে নেমে রামপুরা থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বিভিন্নভাবে তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে মামলা করা থেকে বিরত রাখেন। মামলার বিষয় পুলিশ তাকে নিরুৎসাহিত করেছে।
রাফিয়া বলেন, ‘আমি রামপুরা থানায় মামলা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওসি রফিকুল ইসলাম আমাকে বলেন, ‘ক্ষমা একটি মহৎ গুণ। আপনি ক্ষমা করে দিন। আপনি একজন শিক্ষার্থী। শ্রমিকের বিরুদ্ধে আপনি এসব মামলা করতে যাবেন?’ আমি রক্তাক্ত ছিলাম। সে অবস্থাতেও রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সোলাইমান গাজী আমাকে বলেন, ‘মামলা করলে লঘু পাপে গুরুদণ্ড হয়ে যাবে।’
রাফিয়া বলেন, ‘আমি মামলা করতেই চেয়েছি। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা মামলা নিতে চাচ্ছিলেন না। বিভিন্নভাবে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন। থানায় যাওয়ার পরও আমার নাক থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। একপর্যায়ে রাত ১২টা নাগাদ বাসের ওই হেলপারকে ধরে নিয়ে আসেন তারা। পরে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে-শুনিয়ে মামলা গ্রহণের বদলে একটি জিডি নিতে রাজি হন তারা।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৯ অক্টোবর, ২০২১)