‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে শান্তি ফিরে আসবে’
দিরিপোর্ট ২৪ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে শান্তি ফিরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীরা পদত্যাগ করেছেন, দেশে যে সঙ্কট ও অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে শান্তি ফিরে আসতো।
নয়াপল্টনে সোমবার বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মন্ত্রীদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৮৪ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয় দিনে সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, রবিবার প্রধানমন্ত্রী জনগণের শান্তির কথা বলেছেন, এটি তার অন্তরের কথা নয়। তার যদি সদিচ্ছা থেকে থাকে তাহলে পদত্যাগ করে শান্তি ফিরিয়ে আনবেন। জনগণের অন্তরের আহবানে সাড়া না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজের ‘জিদ’কে প্রশ্রয় দিয়ে একটি একদলীয় একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। আর তার ‘জিদ’কে উৎসাহ প্রদান করছে প্রধানমন্ত্রীর অনুগত কিছু গণবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিবর্গ। তারাই যোগ্য পরামর্শক হিসেবে এখন প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিবেচিত হচ্ছেন।
এ সময় সর্বদলীয় নির্বাচনের উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
একদলীয় নির্বাচন প্রতিহত করার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিহত করার ব্যাপারটি দলের পলিসিমেকারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন।
রবিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাতীয় খতিব সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘হরতালে যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারা হয় এসব দেখে আমার খুব কষ্ট হয়। এসব দেখে মনে হয় প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি চাই দেশের মানুষের সুখ আর শান্তিতে থাকুক। দেশের মানুষ দু’মুঠো ভাত খেয়ে শান্তিতে ঘুমাক এটাই আমার প্রত্যাশা।’
হরতালের সমর্থনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ এখন রাস্তায় নেমে এসেছে দাবি করে রিজভী বলেন, সংবিধানে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দেশের গণতন্ত্রকামী জনসাধারণ লড়াইমুখর মুহুর্ত কাটাচ্ছে। অবৈধভাবে গেড়ে বসা বর্তমান সরকারের নানামূখী নিপীড়ণ নির্যাতন এবং হিংসাশ্রয়ী নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েও এক আদর্শিক উচ্চতায় অবস্থানকৃত বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা মরণপন চলমান হরতালের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিরোধী দলের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে টার্গেট করে এরা এখন নানামূখী চক্রান্তের জাল বুনে যাচ্ছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দল ও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য এক কুৎসিত অমানবিক পন্থা অবলম্বন করেছে। তার বাসায় পানির লাইন কেটে দেয়া হয়েছিল। বাসায় বাজার, খাবার কিছুই ঢুকতে দেয়া হয়নি। এখনও মাঝে মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। আত্মীয়স্বজনদেরও অবাধ যাতায়াতে বাধা দেয়া হচ্ছে। একজন জাতীয় নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার প্রতি সরকারের এ এক জঘন্যতম অসদাচরণ।
রিজভী বলেন, ‘জনগণকে বিভ্রান্ত করে একসময় স্বৈরাচারকে নূতন মোড়কে একটি স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক মুখমন্ডল দেয়ার জন্য এই নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
আন্দোলনের যে তরঙ্গ উঠেছে সেটিকে আটকানোর ক্ষমতা সরকারের নেই। সরকারের একগুঁয়েমি ও অনড়তার কারণে দেশে যে কালাগ্নি জ্বলছে তাতে যবনিকা পতনের আর দেরি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানান, ৯ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগরী পর্যন্ত বিএনপিসহ ১৮ দলের নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন-১২৬০ জনের অধিক, আহত-৩২০০ জনের অধিক, মামলায় আসামী করা হয়েছে ১৩ হাজারের অধিক, ভ্রাম্যমান আদালত সাজা প্রদান করেছেন ১৯ নেতাকর্মীকে।
(দিরিপোর্ট ২৪ /এমএইচ/ এসবি/এমডি/নভেম্বর ১১, ২০১৩)