আফগান ও ভারতের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে সেমিতে নিউজিল্যান্ড
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ম্যাচটা ছিল নিউজিল্যান্ড আর আফগানিস্তানের। তবে এই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের হার চাইছিল ভারতও। তার ওপরই যে নির্ভর করছিল বিশ্বকাপে বিরাট কোহলিদের বাঁচা মরা! এমন এক ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তানকে। তাতে কার্যত এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়ে গেছে দলটির। আফগানিস্তানের সঙ্গে যে বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে ভারতেরও! আর কিউইরা চলে গেছে সেমিফাইনালে।
নিউজিল্যান্ড আর আফগানিস্তানের জন্য ম্যাচটা ছিল বাঁচা মরার। ভারতের জন্যও বৈকি! নিউজিল্যান্ড এ ম্যাচে হেরে বসলে আফগানদের সমান ছয় পয়েন্ট নিয়েও বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিত নেট রান রেটে আফগানদের থেকে পিছিয়ে পড়ে। সেটা হলে নেট রান রেটে লড়াইটা হতো রশিদ খান আর বিরাট কোহলিদের মধ্যে। শেষ ম্যাচে নামিবিয়াকে নির্দিষ্ট অঙ্ক কষে হারিয়ে দিতে পারলেই ভারত চলে যেত সেমিফাইনালে, সেটা না হলে প্রথমবারের মতো শেষ চার নিশ্চিত হতো রশিদ খানদের।
তবে নিউজিল্যান্ড তার কোনোটাই হতে দেয়নি আদৌ। ম্যাচটা জেতার মতোই জিতেছেন কেন উইলিয়ামসনরা। তাতে বিশ্বকাপ থেকে বাকি দুই দলকে ছিটকে দিয়ে নিজেরা চলে গেছে সেমিফাইনালে।
অথচ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের শুরুটা হয়েছিল টস হেরে। আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী টসে জিতেই নিয়েছিলেন ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত, বড় ম্যাচে প্রতিপক্ষকে রান-পাহাড়ে চাপা দেওয়ার লক্ষ্য থেকে।
তবে শুরুতে কিউই পেসারদের তোপেই সে কৌশল ভেস্তে যায় তাদের। শর্ট বলে ট্রেন্ট বোল্ট আর অ্যাডাম মিলনে তুলে নেন দুই আফগান ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাই আর মোহাম্মদ শাহজাদের উইকেট। এরপর টিম সাউদির গতিতে পরাস্ত হন আরেক ডেঞ্জারম্যান রহমানউল্লাহ গুরবাজও। আফগানদের তরী সেই যে ঝড়ের কবলে পড়ল, তা থেকে বেরোতে পারল না আর।
নাজিবউল্লাহ জাদরান লড়লেন কিছুক্ষণ। কিন্তু তার ৪৮ বলে ৭৩ রানের ইনিংস আফগানদের ইনিংসকে কেবল ভদ্রস্থ একটা চেহারাই দিতে পেরেছে, বড় রানের পুঁজি আর এনে দিতে পারেনি বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায়। দলটির ইনিংস শেষ হয় ২০ ওভারে ৮ উইকেট খুইয়ে ১২৪ রান তুলেই।
বড় ম্যাচে এমন ছোট লক্ষ্যও মাঝেমধ্যে পাহাড়সম মনে হয়। ২০১৪ বিশ্বকাপেই তো এমন এক অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনালে রঙ্গনা হেরাথের অবিশ্বাস্য ৩ রানে ৫ উইকেটের কীর্তিতে এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই মাত্র ১২৬ রান ডিফেন্ড করেছিল শ্রীলঙ্কা, চলে গিয়েছিল সেমিফাইনালে। আফগান দলে একজন রঙ্গনা হেরাথ না থাকলেও ঘূর্ণিজাদুকরদের তো অভাব নেই। রশিদ খান, মুজিব উর রহমানরাও যদি করে বসেন তেমন কিছু! আফগানদের সম্ভাবনাটা তাই মরে যায়নি তখনো।
তবে সে সম্ভাবনাটা বাস্তবে রূপ দিতে পারেননি তারা। মুজিব ছিলেন আধাফিট, কার্যকরিতা দেখাতে পারেননি তিনি, তবে একটা উইকেট তুলে নিয়েছিলেন ঠিকই। রশিদ খানও তুলে নিয়েছেন একটা উইকেট, তবে তাকেও দেখেশুনেই খেলেছে কিউইরা। ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডকে তাই কখনোই বিপদে ফেলতে পারেনি আফগানরা। ৫৭ রানে দুটো উইকেট তুলেছে বটে, এরপর কেন উইলিয়ামসন আর ডেভন কনওয়ের অবিচ্ছিন্ন ৬৮ রানের জুটি উঠে এসেছে একেবারে খেলাটা শেষ করেই। যার ফলে কিউইরা চলে যায় সেমিফাইনালে, আর ভারত-আফগানদের গন্তব্য হয় দেশে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৭ নভেম্বর, ২০২১)