আমিনুল ইসলাম, দিরিপোর্ট২৪ : একের পর এক হরতালে বিরূপ প্রভাব পড়েছে রাজধানীর খেটে খাওয়া মানষের ওপর। তাদের দৈনিক আয় নেমে এসেছে অর্ধেকে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বাঁচার তাগিদে জড়িয়ে পড়ছেন ধার ও ঋণের বৃত্তে।

লালমানিরহাট থেকে ঢাকায় আসা রিকশাচালক রতন সোমবার জানান, স্বাভাবিক দিনে খরচ-পাতি বাদ দিয়ে তার আয় হতো ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। সেখানে হরতালের দিন আয় নেমে এসেছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়।

একই দশা রিকশাচালক ফিরোজেরও। দিনাজপুর থেকে কর্মসূত্রে তার বাস এখন ঢাকার মোহাম্মদপুরে। তিনি জানান, মোহাম্মদপুর থেকে সকালে ১০০ টাকা ভাড়ায় মতিঝিলে এক যাত্রীকে এনেছেন।

ফিরোজের ভাষ্য ‘এমনিতে প্রতিদিন খরচা-পাতি বাদ দিয়ে চার থেকে পাঁচশত টাকা আয় থাকে। কিন্তু হরতালে তা অর্ধেকে নেমে আসে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের খুব সমস্যা হবে।’

তবে ভিন্ন কথা বললেন রিকশাচালক নুরুল আমীন। তার বাড়ি জামালপুর। দুপুর ২টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিশ্রামে থাকা নুরুল বলেন, ‘শুধু বিকেলে চালাই। ৫/৬শ টাকা আয় হয়। যানজট নেই, রাস্তা ফাঁকা। কম যাত্রী, কম ভাড়া পুষিয়ে যায়।’

মতিঝিলের জনতা ব্যাংক ভবনের সামনে ১৯৮৬ সাল থেকে চা বিক্রি করছেন চাঁদপুরের মিজান। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার চা বিস্কুট বিক্রি হয় তার। দিনে মুনাফা থাকে ৭ থেকে ৮শত টাকার মতো। কিন্তু হরতালে এ বিক্রি নেমে আসে ২ থেকে ৩ হাজার টাকায়।

মিজান জানান, তার স্ত্রী আয়-ব্যয়ের হিসেব চায়। তাকে বোঝানো যায় না হরতালে আয় কমে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে সংসার চালাতে অন্যের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ করতে হয়েছে তাকে।

বেইলি রোডের দোকানদার মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এ মাসের প্রথম ১১ দিনের মধ্যে ৭ দিনই দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে। বেচা-বিক্রি বন্ধ।’ মাস শেষে কর্মচারিদের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে উদ্বেগের কথাও জানান তিনি।

মতিঝিলে অবস্থিত ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের কার্যালয় এফবিসিসিআই ভবনের সামনের ফুটপাতে কথা হয় শিবচরণের সঙ্গে। ১৫ বছর ধরে জুতা সেলাইয়ের কাজ করছেন তিনি। শিবচরণ জানান, হরতালে আয় অর্ধেক কমে গেছে তার।

(দিরিপোর্ট২৪/এআই/এইচএস/এনডিএস/নভেম্বর ১১, ২০১৩)