দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নারীবিদ্বেষী অসৌজন্যমূলক বক্তব্য ও ফোনালাপে অশালীন কথোপকথনের পর সদ্য তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা এবং জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ পাওয়া ডা. মুরাদ হাসানের সম্প্রতি বিতর্কিত কর্মকাণ্ড বিষয়ে জুডিসিয়াল তদন্তের জন্য পদক্ষেপ ও এমপি পদের বৈধতা চেয়ে করা রিটের ওপর আগামী ১২ ডিসেম্বর (রবিবার) শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

ওইদিন বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মুস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ।

তিনি বলেন, সদ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জুডিসিয়াল তদন্তের জন্য পদক্ষেপ নেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে করা রিটটি এই বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলে আদালত আগামী রবিবার শুনানিতে আসতে বলেছেন।

গতকাল বুধবার (৮ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট আবেদন দায়ের করেন।

রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। এ ছাড়া এমপি ডা. মুরাদের পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার আসন শূন্য ঘোষণার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে রিটে।

রিটে এমপি মুরাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড বিষয়ে জুডিসিয়াল তদন্তের জন্য পদক্ষেপ নিতে ও তার সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও টেলিফোন সংলাপ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে রুল জারির আর্জিও জানানো হয়েছে।

রিটকারী আইনজীবী জানান, অশালীন, শিষ্টাচার-বহির্ভূত ও নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় গত সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পান ডা. মুরাদ। সে মোতাবেক মঙ্গলবার বিকেলে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।

পরে মঙ্গলবার রাতেই প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ডা. মো. মুরাদ হাসানের পদত্যাগের পত্র গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ওই রাতেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। পরে তা গেজেট আকারে প্রকাশ হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদের করা নারীবিদ্বেষী মন্তব্য ঘিরে কদিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছিল। এরইমধ্যে সোমবার রাতে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর ফোনালাপের একটি কল রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে নায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নোংরা ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে তাকে আপত্তিকর প্রস্তাব ও হত্যার হুমকিও দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এমনকি মুরাদের শাস্তিরও দাবি ওঠে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০৯ ডিসেম্বর, ২০২১)