দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও মুরগির দাম। অন্যদিকে সরবরাহ থাকায় বাজারে কমেছে সবজির দাম। এছাড়া, অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কাওরান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার, খিলক্ষেত বাজার, আজিমপুর কাঁচাবাজার, হজ্জ ক‍্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধা কাঁচা বাজার, মিরপুরের ১১ নম্বর বাজার, মিরপুর কালশী বাজার ও পল্লবী এলাকা ঘুরে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

বাজারে মানভেদে আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৮০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৬০ টাকা, আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা।

দাম কমেছে কয়েকটি সবজির। বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ফুল কপি (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, দাম কমে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে চালের দাম। বাজারে প্রতি কেজি চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৮ টাকা, মাঝারি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫৫ এবং মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজি দরে। খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৪ থেকে ৩৮ টাকা, প‍্যাকেটজাত বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা এবং প‍্যাকেটজাত বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি।

প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩৮ থেকে ১৪০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা, বোতলজাত বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। খোলা পাম অয়েল ১২৮ থেকে ১৩০, গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা এবং পাম অয়েল সুপার বিক্রি হচ্ছে ১৩৩ থেকে ১৩৫ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ১৩৫ থেকে ১৩৮ টাকা লিটার।

এদিকে, বাজারে বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা দাম কমেছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এছাড়া বরবটি ৮০ টাকা, সিম ৪০-৬০ টাকা, (গোল) বেগুন ৬০ টাকা, (লম্বা) বেগুন ৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৪০ টাকা, লাউ আকারভেদে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা ও পেঁপের কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মিরপুর ১১ নম্বর বাজারের সবজি বিক্রেতা আল আমিন বলেন, শীতের মৌসুম আসায় সবজির দাম কমেছে। এখন বাজারে সবজির সরবরাহ ও আমদানি ভালো আছে। তাই দাম বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

তবে বাজারে বেড়েছে আলুর দাম। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২০ থেকে ২৫ টাকায়। নতুন আলুর কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১৫ টাকা বেড়েছে। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫৫-৬০ টাকায়।

কালশী বাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা কমল হোসেন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ১৫ টাকা বেড়েছে। আমদানি কম, ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি।

এ ছাড়াও, বেড়েছে রসুনের দাম। ইন্ডিয়ান ও চায়না রসুনের দাম বেড়েছে। ইন্ডিয়ান রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। আগে বিক্রি হতো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। চায়না রসুনের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। আগে বিক্রি হতো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি।

মিরপুর ১১ নম্বর বাজারের পেঁয়াজ-রসুন বিক্রেতা মো. কবির হোসেন বলেন, আমদানি কম থাকায় দাম বেড়েছে রসুনের। মৌসুম শেষের দিকে এমনিতেই বাড়তি দাম থাকে। বাজারে সরবরাহ কম থাকলে সবাই পেঁয়াজ-রসুন কিনতে চায়। আর এ সময় বেড়ে যায় দাম।

এসব বাজারে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।

এছাড়া, শুকনা মরিচ ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১৩০ টাকা ও আদা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। হলুদের কেজি ১৬০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। দেশি ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। এসব বাজারে প্রতি লিটার ভোজ্য তেল খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেলের লিটারও বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।

বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। প্যাকেট চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়।

গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। সোনালী (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।

পাশাপাশি বাজারে বেড়েছে মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। ২০ টাকা দাম বেড়ে সোনালি মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে সোনালি মুরগির কেজি ছিল ২৩০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা।

১১ নম্বর বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, মাসের শুরু আর শুক্রবার হওয়াতে মুরগির দাম বেড়েছে। চলতি মাসে বন্ধ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকায় মুরগির দাম চড়া থাকবে বলেও মনে করেন তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১০ ডিসেম্বর, ২০২১)