কবর থেকে কুয়েট অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মরদেহ উত্তোলন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
আজ (বুধবার) সকাল সোয়া ১০টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ সাদাত ও কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদারের উপস্থিতিতে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফারহানা লাবিব, খুলনা খান জাহান আলী থানার ওসি প্রবীর কুমার ও পরিদর্শক শাহরিয়ার হাসান।
খুলনার খান জাহান আলী থানার ওসি প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় গত ৪ ডিসেম্বর থানায় একটি জিডি করা হয়। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করার জন্য গত ৫ ডিসেম্বর খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়। জেলা প্রশাসক ১৩ ডিসেম্বর লাশ উত্তোলনের অনুমতি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার খানজাহান আলী থানা পুলিশের একটি টিম কুষ্টিয়ায় গেছে।
অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মরদেহ উত্তোলনের সময় তার পরিবারের স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় গত ৩ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কুয়েট অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও ১০ দিন সময় নিয়েছে।
শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করার বিষয়টি আলোচিত হলেও এখনও মামলা হয়নি। পরিবার নাকি কুয়েট কর্তৃপক্ষ মামলা করবে সেই সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত হয়নি।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমাদ জানান, সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম ও হলগুলো ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা তদন্ত সম্পন্ন করতে পারেননি। সে কারণে তারা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আরও ১০ দিন ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার সুপারিশ করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ১২ ডিসেম্বর রাতে সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাস ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তারাও তদন্তের জন্য আরও ১০ দিন সময় পেয়েছেন। তবে ২৩ ডিসেম্বরের আগেই তারা তদন্ত সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন।
এদিকে ড. সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। এ ব্যাপারে ড. সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। শিশু কন্যাকে নিয়ে কোথায় যাবেন, কী করবেন? তার নিরাপত্তা নেই। তিনি চান কুয়েট কর্তৃপক্ষ মামলা করুক। বিষয়টি ইতোমধ্যে তিনি শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে কুয়েট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার মনোনীত ছাত্রকে সম্প্রতি লালন শাহ হলের ডাইনিং ম্যানেজার নিযুক্ত করার জন্য হলের প্রভোস্ট ড. সেলিমকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর সেজান ৪০-৪২ জন নেতাকর্মীকে নিয়ে আবারও ড. সেলিমকে চাপ প্রয়োগ এবং তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে বাসায় গিয়ে হার্ট অ্যাটাকে ড. সেলিমের মৃত্যু হয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১)