দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিয়ে বিচ্ছেদের এক বছর পর স্বামীর নির্যাতন নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে করা এক পোস্টে তিনি জানান, শারীরিক নির্যাতন করতেন তার স্বামী। নির্যাতনে তার হাত ভেঙে গিয়েছিল।

২০১৫ সালে ফেসবুকে বেসরকারি চাকরিজীবী হারুনুর রশীদ অপুর সঙ্গে পরিচয় হয় শবনম ফারিয়ার। ২০১৮ সালে তারা আংটি বদল করেন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে হয় ফারিয়া ও অপুর। বিয়ের ঠিক ১ বছর ৯ মাসের মাথায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ হয় তাদের। তখন ফারিয়া বিচ্ছেদের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনিনি। সাবেক স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কে কোনো তিক্ততা নেই বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ইলমার মৃত্যু প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই ফারিয়া স্বামীর নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুললেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘মৃত মেয়েটার ছবি দেখার পর বার বার আমি দেড়/দুই বছর পেছনে ফিরে যাচ্ছিলাম। মনে পড়ছে কীভাবে আমি দেবী সিনেমার পুরো প্রোমোশন ভাঙা হাত নিয়ে করেছি, যখন কেউ জানতে চেয়েছে কি হয়েছে, বলেছিলাম সিঁড়ি থেকে পড়ে ব্যথা পেয়েছি! আমার সাহস ছিল না সবাইকে বলার যে কীভাবে ব্যথা পেয়েছি!

কারণ আমি জানতাম এই মানুষটার সাথেই থাকতে হবে, নইলে মানুষ কি বলবে! আমার মা সমাজে মুখ দেখাবে কীভাবে! আমার দুই বোন যে স্বপ্ন নিয়ে এত আয়োজনের প্ল্যান করছে তাদের কি জবাব দেব!কাবিনের তিন মাস না যেতেই এত কিছু! নিশ্চয়ই সমস্যা আমারই!

আমি এইটা ভেবে দিনের পর দিন জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে, রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি!
বার বার ভেবেছি কিছু হলে সবাই আমাকেই খারাপ বলবে! কিন্তু আমি খুব সৌভাগ্যবান যে আমার মা আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে! সাহস দিয়েছে! বুঝিয়েছে মানুষ কি বলে তার চেয়ে নিজের ভালো থাকা আরও অনেক জরুরি! জোর করে বিয়ে টিকিয়ে রাখার চেয়ে বেঁচে থাকা আরও জরুরি!!!

বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত কণ্ঠশিল্পী লোপা হোসাইনের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্ট শেয়ার করে কথাগুলো লিখেছেন শবনম ফারিয়া। লোপা হোসাইন ওই পোস্টে লিখেন, ‘সহ্য করতে না পেরে ডিভোর্স দিলে কতনা গালি খেত এলমা মেয়েটা। সহ্য করতে করতে মরে গেল বলেই না এখন আমরা মায়াকান্না কাঁদছি...

এ দেশের বাবা-মায়েরা সমাজে মানইজ্জত বাঁচাতে মেয়েদের এমনভাবে ব্রেইনওয়াশ অথবা ব্ল্যাকমেইল করে যে ডিভোর্স দিয়ে লাইফের রিস্টার্ট বাটন চাপার চেয়ে পাওয়ার অব বাটন চেপে দেওয়াই বেশি সহজ মনে হয়। আর তার আগেই যদি স্বামী, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেরে ফেলে, তাহলে তো কথাই নেই...

এসব ঘটনা দেখলে নিজের অজান্তেই নিজের অতীতে ফিরে যাই...’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১)