দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: টানা ৩ দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে আসা বেশকিছু পর্যটককে দালাল ও মধ্যস্থ সুবিধাভোগীদের কারণে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। কতিপয় আবাসিক হোটেল-মোটেল, গাড়ি পার্কিং ও খাবার রেস্তোরাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট নানান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত মূল্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বিপুলসংখ্যক পর্যটক সমাগম ঘটায় হোটেল-মোটেল জোনসহ কক্সবাজার শহরের সবকটি আবাসিক হোটেল রুম বুকিং হয়েছে। হোটেলে ঠাঁই না হওয়ায় আগত পর্যটকদের অনেককে রাত্রিযাপন করতে হয়েছে যাত্রীবাহী বাস, সৈকতের কিটকটে (বিনোদন ছাতা)। আবার অনেককে সৈকতের খোলা আকাশের নিচেও থাকতে দেখা যায়। কেউ কেউ অবস্থান নেন স্থানীয়দের বাসা-বাড়িতে।

এদিকে বিকল্প স্থানে থাকতে গিয়ে এসব পর্যটকদের মোটা টাকাও গুনতে হয়েছে। এদের মধ্যে সবচাইতে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পরিবারসহ ভ্রমণ করতে আসা লোকজনদের। থাকার ব্যবস্থা না হওয়ায় পর্যটকদের অনেককে অবস্থান নিতে হয়েছে কক্সবাজার শহরের আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ও উপজেলা সদরের বেশকিছু এলাকায়ও।

স্থানীয়দের বাসা-বাড়িতে থাকতে গিয়ে আগত পর্যটকরা ভোগান্তির মধ্যে পড়ায় অনেকেই ভ্রমণসূচি সংক্ষিপ্ত করে ফিরে যাচ্ছেন কক্সবাজার থেকে।

ট্যুরিস্ট পুলিশসহ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা ৩ দিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে এখন অবস্থান করছে অন্তত তিন লাখ পর্যটক। একসঙ্গে এত বিপুলসংখ্যক পর্যটক সমাগম ঘটায় এক শ্রেণির দালাল চক্র আগে থেকে নিজেদের নামে হোটেল রুম বুকিং করে কৃত্রিম সংকটের সৃষ্টি করে এক ধরনের নৈরাজ্যে লিপ্ত হয়। তবে টানা ছুটিতে এক সঙ্গে অসংখ্য পর্যটক সমাগম ঘটায় সীমিত জনবল দিয়ে পর্যাপ্ত সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে কক্সবাজার শহরের অলিগলি ও হোটেল মোটেল জোনে চলছে পার্কিংয়ের নামে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। শুধু মালামাল ওঠানো-নামানোর ক্ষেত্রে টোল আদায়ের জন্য বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন যানবাহন ও কুলি স্ট্যান্ড ইজারা নেওয়া হলেও এভাবেই পার্কিংয়ের নামে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে।

কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোন এলাকার আবাসিক হোটেল রিগ্যাল প্যালেসে অবস্থানকারী আবুল কাশেম বলেন, ঢাকায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকরি করেন। করোনা মহামারির কারণে গত ২ বছর একপ্রকার বন্দি জীবনযাপন করেছেন। টানা ৩ দিন সরকারি ছুটি থাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন। কিন্তু হোটেল রুম বুকিং করতে গিয়ে গুনতে হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ গুন বেশি ভাড়া।

ট্যুরিস্ট পুলিশ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমদ জানান, টানা ৩ দিনের ছুটিতে এখন কক্সবাজারে ৪ লাখের বেশি পর্যটক সমাগম ঘটেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পুলিশের ১৭টি দল দায়িত্ব পালন করছে।

তিনি আরও জানান, পর্যটক হয়রানি ও ভোগান্তি নিয়ে কিছু খবর পুলিশ পেলেও বিপুল সংখ্যক আগত লোকজনকে সীমিত জনবল নিয়ে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১)