দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: তুরস্কে চরম মুদ্রাস্ফিতির মুখে জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। দেশটির মুদ্রা লিরার দাম প্রতিনিয়ত কমছেই। এমন পরিস্থিতিতেও সুদের হার না বাড়ানোর ইসলামিক আর্থিক নীতি না বদলানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। যদিও তার এমন বক্তব্যের পর লিরার দাম সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

আর্থিক নীতি সম্পর্কিত দেওয়া এক ভাষণে এরদোয়ান বলেন, ইসলামকে অনুসরণ করেই সুদের হার কম করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাহায্য করা হবে এবং পেনশন তহবিলে আরও অর্থ দেওয়া হবে।

এরদোয়ান আরো বলেন, একজন মুসলিম হিসেবে আমি সেটাই করব, যা আমাকে ইসলাম করতে বলে। সেটাই আমার কাছে একমাত্র নীতি-নির্দেশিকা।

অবশ্য প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ভাষণের পর লিরার দাম ১০ শতাংশ বাড়ে। নভেম্বরের শুরু থেকে লিরার দাম ৪৫ শতাংশ পড়ে গেছে। সোমবার দেশের প্রধান শেয়ার বাজারে একসময় বেচাকেনা কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়।

এর আগে গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছিলেন, তিনি আর্থিক স্বাধীনতার জন্য লড়াই লড়ছেন। মূলত তুরস্ককে বিদেশি বিনিয়োগের নির্ভরতা থেকে বের করে আনাই তার লক্ষ্য।

তুরস্কের মুদ্রাস্ফীতির হার বর্তমানে ২০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এরদোয়ানের নীতির ফলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তুরস্কে মুদ্রাস্ফীতির হার ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট মনে করেন, মুদ্রার দাম কম হলে রফতানি বাড়বে। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মুদ্রাস্ফীতি কমাতে হলে সুদের হার বাড়াতে হবে। তবে এরদোয়ান আবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি মুদ্রাস্ফীতির হার চার শতাংশের মধ্যে রাখবেন।

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে তুরস্কের নতুন মুদ্রা লিরা চালু হয়। লিরা চালু হওয়ার পর থেকে বিশ্ববাজারে এই মুদ্রার মান বেশ ভালো অবস্থানে ছিল। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে লিরার দরপতন শুরু হয়। লিরার সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ২০০৮ সালে। তখন এক তুর্কি লিরায় ৫৮ টাকা পাওয়া যেত। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধের পর থেকে তুরস্কে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে মুদ্রাস্ফীতি শুরু হয়। যা এখন সর্বনিম্ন রেকর্ড গড়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ২১ ডিসেম্বর, ২০২১)