দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৪৭ জনের চিকিৎসা চলছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাদের চিকিৎসায় ঢাকা থেকে ৭ সদস্যের টিম এবং বরিশালের অর্ধশতাধিক চিকিৎসক কাজ করছেন।

হাসপাতাল থেকে সব ধরনের চিকিৎসা সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধ ও খাবার সরবরাহে সন্তুষ্ট দগ্ধরা। তবে স্বজনহারা দগ্ধ রোগীদের চোখের পানি যেন থামছে না। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও নেই কারও কাছে। এ দুর্ঘটনায় লঞ্চ স্টাফদের দুষছেন দগ্ধরা।

বরিশাল নদীবন্দর পার হওয়ার আগেই আগুন ধরে যাওয়া লঞ্চটির দ্বিতীয় তলার ডেক গরম হয়ে গিয়েছিল। বারবার বলার পরও লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান দগ্ধরা।

হাসপাতালের বেডে চিকিৎসারত একাধিক রোগী জানান, বরিশাল নদীবন্দর পার হওয়ার পূর্ব থেকেই দ্বিতীয় তলার ডেক গরম হওয়ায় বসা যাচ্ছিল না। বিষয়টি একাধিকবার লঞ্চ স্টাফদের জানানোর পর তারা গরম নিরসনে ব্যবস্থা করে। কিন্তু তাতেও মানছিল না। ওই সময় লঞ্চটি বরিশাল নৌবন্দরে নোঙর করলে এত বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে আমরা বেঁচে যেতাম। এ জন্য লঞ্চ স্টাফদের কঠোর বিচারের দাবি জানান তারা।

এদিকে হাসপাতাল থেকে সকল ধরনের চিকিৎসা সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি ওষুধ এবং খাবার সরবরাহে খুশি আহত ও তাদের স্বজনরা।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৬৭ রোগীকে ঝালকাঠি থেকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদের মধ্যে যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক সেই ধরনের ১৯ রোগীকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। এ ছাড়া এক শিশু চিকিৎসাধীন মারা গেছে। বর্তমানে চিকিৎসারত ৪৭ রোগীর অবস্থা ভালো। তাদের চিকিৎসায় ঢাকা থেকে ৭ সদস্যের একটি টিম আজ সকাল থেকে কাজ শুরু করেছেন। তাছাড়া ওই সকল রোগীদের চিকিৎসায় কোন ধরনের ত্রুটি না হয় এ জন্য অর্ধশতাধিক চিকিৎসক নিয়ে আরো একটি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা গতকাল থেকেই দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। একই সঙ্গে রোগীদের অবস্থা ভালো না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতলের সকল চিকিৎসক-নার্স এবং স্টাফদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিন কক্ষে আগুন লেগে মারা গেছেন ৩৮ জন। দগ্ধ হন শতাধিক যাত্রী। তাদের ৪৭ জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১)