দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের দুই কর্মী দেশটির সামিরক বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন। হামলার পর ওই দুই কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছিল সংস্থাটি। ২৮ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার  এই তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। ২৯ ডিসেম্বর  এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

গত শুক্রবার মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ প্রদেশে দেশটির সামরিক বাহিনীর একটি হামলায় নিহত ৩৫ জনেরও বেশি মানুষের মৃতদেহ উদ্ধার করে সেভ দ্য চিলড্রেন। হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। ওই হামলায়ই নিহত হন সেভ দ্য চিলড্রেনের দুই কর্মী। এই হামলা ও প্রাণহানির জন্য সরাসরি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে দায়ী করেছে আন্তর্জাতিক এই দাতব্য সংস্থাটি। এই হামলার জবাবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন।

সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, হামলার সময় ইস্টার্ন কায়াহ প্রদেশে সেনা সদস্যরা মানুষজনকে গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে। এরপর কাউকে কাউকে গ্রেফতার করে। আবার অন্যদের হত্যা করে তাদের শরীর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরা থাকলেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দাবি, তারা ওই এলাকায় বেশ কয়েকজন সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।

সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, মিয়ানমারে সামিরক বাহিনীর হামলায় নিহত তাদের দুই কর্মী সম্প্রতি নতুন বাবা হয়েছিলেন। তারা উভয়েই শিশু শিক্ষা নিয়ে কাজ করতেন। সংস্থাটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উভয় কর্মীই মানবিক কাজে অংশ নেওয়ার পর বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সেনাবাহিনীর হামলা ও হত্যাকাণ্ডের শিকান হন তারা।

এছাড়া এক বিবৃতিতে সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রধান নির্বাহী ইঙ্গার আশিং বলেন, ত্রাণ কর্মীসহ নিরীহ জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা অসহনীয় এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন। এই হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে লংঘন করেছে। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; মিয়ানমারের জনগণকে ক্রমবর্ধমান হামলায় লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। আর তাই অবিলম্বে এসব ঘটনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

এদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বলছে, সেনা সদস্যরা ‘সন্দেহজনকভাবে’ চলাচলকারী ৭টি গাড়িকে থামানোর চেষ্টা চালালে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলার পর সংঘর্ষের সময় সৈন্যরা কয়েকজনকে হত্যা করে।

অপরদিকে কারেন জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী নামে পরিচিত ওই অঞ্চলের একটি সরকারবিরোধী মিলিশিয়া দল জানিয়েছে, গত শুক্রবার সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হাতে যারা নিহত হয়েছেন তারা মিলিশিয়া সদস্য নন, তারা মূলত পলায়নরত বেসামরিক মানুষ।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ২৯ ডিসেম্বর, ২০২১)