দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: প্রথমে হোটেল বয়, পরে ভ্যানে ফেরি করে গার্মেন্টস পণ্য বিক্রয় করতেন ছগির হোসেন (৪৭)। রাজধানীতে একপর্যায়ে ইদ্রিস নামক এক জাল টাকা কারবারির সঙ্গে সখ্যতা হয় তার। গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর পল্লবীর একটি বাসা থেকে ছগিরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এদের কাছ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ জাল টাকা ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জাল নোটসহ চক্রের অন্যতম হোতা ছগির হোসেন (৪৭) এবং তার সহযোগী মোছা. সেলিনা আক্তার পাখি (২০) ও রুহুল আমিন (৩৩)।

এর আগে ২০১৭ সালে জাল নোটসহ ইদ্রিস ও ছগির গ্রেপ্তার হয়। এক বছর জেল খেটে পুনরায় তারা জাল টাকা তৈরির কারবারে জড়ায়।

র‌্যাব জানায়, শীতকালীন বিভিন্ন মেলা, জন-সমাগম অনুষ্ঠান, বিশেষ করে পূর্বাচলে আয়োজিত বাণিজ্য মেলাকে কেন্দ্র করে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা তারা তৈরির পরিকল্পনা করেছিল।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, গত ২৮ নভেম্বর র‍্যাব-৪ এর একটি দল মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকার মূল্যমানের জাল নোটসহ জাল নোট তৈরি ও বিক্রয়কারী চক্রের সক্রিয় ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে

তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ চক্রটির মূলহোতা ও অন্যান্য সহযোগীদের সম্পর্কে জেনে র‍্যাব-৪ এর সদস্যরা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর পল্লবী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জাল নোট তৈরি চক্রের মূলহোতা ছগির হোসেনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ সময় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট, ৫টি মোবাইল ফোন, ২টি ল্যাপটপ, ১টি সিপিইউ, ১টি মনিটর, ৩টি প্রিন্টার, ১টি হ্যান্ড এয়ারড্রয়ারসহ জাল নোট তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।

কমান্ডার মঈন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতারা জানিয়েছে, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা ও বরিশালসহ বিভিন্ন এলাকায় এ জাল নোট তৈরি করে বিভিন্ন লোকের কাছে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে আসছিল। চক্রের সঙ্গে ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য জড়িত রয়েছে।

খন্দকার মঈন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ছগির জানিয়েছে, করোনাকালীন সময়ে মাঝে মাঝে ছগির নিজেও এ জাল নোট স্থানীয় বাজারে ব্যবহার করত। কয়েকবার সে সাধারণ জনগণের হাতে ধরাও পড়েছিল। সাধারণত কোনো মেলায়, ঈদে পশুর হাটে ও অধিক জনসমাগম অনুষ্ঠানে তারা জাল নোট বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ব্যবহার করত। সম্প্রতি পূর্বাচলে আয়োজিত বাণিজ্য মেলা ও শীতকালীন প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন উৎসব ও মেলাকে কেন্দ্র করে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা তারা তৈরির পরিকল্পনা করে। এ লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় ধরে সে জাল টাকা তৈরি করে আসছিল। ২০১৭ সাল থেকে ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের জাল টাকা তৈরি করেছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৪ জানুয়ারি, ২০২২)