দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: কাজাখস্তানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্দোলনকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট। গত কয়েকদিন ধরে চলা আন্দোলনে বিপর্য়স্ত হয়ে পড়েছে মধ্য এশিয়ার দেশটি। টিভিতে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট কাশেম-জোমার্ট তোকায়েভ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীদের নির্মূল করা হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সন্ত্রাস বিরোধী অপারেশন চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তোকায়েভ।

কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসেম জোমার্ট তোকায়েভ সরকারি ওই আদেশে আরো বলেন, ‘বক্ষোভের নিয়ন্ত্রণ এখন বিদেশী মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের হাতে। আলমাতিতে অন্তত ২০ হাজার ডাকাত ঢুকে গত কয়েকদিন ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে।

৬ জানুয়ারি, শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম ও জ্বালানিসম্পদ সমৃদ্ধ এই দেশটিতে গত ৫ দিনের বিক্ষোভে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৪৪ জন। তাদের মধ্যে ২৬ জন হলেন বিক্ষোভকারী, যাদেরকের কাজাখ সরকার অভিহিত করেছে ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসী’ হিসেবে এবং বাকি ১৮ জন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা।

এলপিজি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গত রবিবার, ২ জানুয়ারি থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় কাজাখস্তানের প্রধান শহর আলমাতি সহ ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা ক্রমশ সহিংস রাজনৈতিক সংঘাতে রূপ নেয়।

কাজাখ পুলিশের মুখপাত্র সালতানেত আজিরবায়েকের দাবি, এই বিক্ষোভের পেছনে সাধারণ মানুষ নেই। একটি সন্ত্রাসী সংগঠন বিক্ষোভে মদত দিচ্ছে। বিক্ষোভের নামে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে তারা। আর তাই বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দেশের সংকটময় এই পরিস্থিতিতে অস্থিতিশীলতার জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করেছেন কাজাখ প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ। কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্টের অনুরোধের পর রাশিয়া দেশটিতে তাদের শান্তিরক্ষীদের পাঠিয়েছে। অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রুশ সেনারা রাস্তায় নামলেও দেশজুড়ে বিক্ষোভ থামার লক্ষণ নেই। বিক্ষোভকারীরা আলমাতির বিমানবন্দর দখল করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার নতুন বছর প্রথম দিনেই কাজাখস্তানে জ্বালানির দাম এক লাফে দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ওই দিনই মানজিস্তাউ শহরে বিক্ষোভ শুরু করেন সাধারণ মানুষ। দ্রুত সেই বিক্ষোভ দেশের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমে তা গণবিদ্রোহের চেহারা নেয়। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৭ জানুয়ারি, ২০২২)