দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ২৬তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ৭ম দিবসে দর্শনার্থীদের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় সকাল থেকেই সব শ্রেণি পেশার লোকজন আসতে থাকে মেলায়৷ তবে ব্যবসায়ীরা তাদের পন্যে ডিসকাউন্ট না দেয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তারা৷

এদিকে ব্যবসায়ীরা দাবী করছেন ১ সপ্তাহে ছুটির দিন ছাড়া খুব একটা জমেনি এ মেলায় বেচাকেনা। তাই সপ্তাহের ছুটির দিনের অপেক্ষায় থাকেন তারা৷

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মেলার ৭ম দিনেও এর প্রবেশপথে ও স্টল নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে। তবে বেশিরভাগ স্টলে পন্যে পরিপূর্ণ রয়েছে।

শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) সরেজমিনে মেলা অভ্যন্তরে দেখা যায়, ঢাকা বাইপাস সড়কের ৪ লেনে উন্নীতকরণ কাজ চলমান থাকায় ধুলোবালিতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে মেলায় আগত দর্শনার্থীরা। এছাড়াও গাড়ী পার্কিং থেকে বিভিন্ন গাড়ীর পার্টস ও বাইকের হেলমেট চুরি হয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে মধুখালীর বাসিন্দা মাহবুব আলম বলেন, আমার বাইক এ মেলায় ২য় তলায় পার্কিং এ রেখেছিলাম। পরে ওখান থেকে চুরি হয়।

এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, অভ্যন্তরীন খাবার হোটেলগুলোতে রাখা হচ্ছে যা খুশি তাই মুল্য। তাদের খাবার হোটেলের সব খাবারের দাম সাধারণের হাতের নাগালের বাইরে।

কর্ণগোপ এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হুদা বলেন, মেলায় দর্শনার্থীদের তুলনায় স্টল সংখ্যা কম। ফলে অতিমূল্য রাখা হচ্ছে ওইসব স্টলে।তাছাড়া মেলায় যাতায়াত পথে ভোগান্তি রয়েছে।

মেলায় ঘুরতে আসা মর্তুজাবাদ এলাকার বাসিন্দা শিক্ষার্থী সাওদা বলেন , মেলায় শিশুদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। ফলে শিশুরা অনেকটা অসহায়। এছাড়াও কোথাও খেলনা সামগ্রির দোকান দেখা যায়নি। রাজধানীর বাড্ডা থেকে আসা দর্শনার্থী কাউছার আল হাবীব বলেন, বাণিজ্য মেলায় আসতে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের বেহাল অবস্থা। সেইসঙ্গে প্রচন্ড ধুলা। তিনি ধূলা কমাতে বাণিজ্য মেলার এ সময়ে রাস্তায় পানি ছিটানোর দাবি জানান।

দর্শনার্থীদের দাবী, মেলার পাশে থাকা মহাসড়ক এশিয়ান বাইপাস সড়ক থেকে আসা ধূলায় দর্শনার্থীদের বিপাকে পড়তে হয় তাই পানি ছিটালে ধূলা কিছুটা কমবে বলে তিনি মনে করেন।

এদিক যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স ব্র্যান্ড ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলা ভালো জমে।এবার আমরাই প্রথম ডিসকাউন্ট দিয়ে ক্রেতা আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছি। অন্যরাও বিভিন্ন পণ্যে ছাড় পেলে ক্রেতারা আকৃষ্ট হবে বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে করোনা মহামারি আবার ইউরোপসহ অন্যান্য কিছু দেশে নতুন রূপে ছড়িয়ে পরায় এবারের বাণিজ্য মেলায় দেশের পাশাপাশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণও কিছুটা কম।

এছাড়া দেশে গত কয়েকদিনে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা বাড়লেও মেলায় মাস্ক ব্যবহারে তেমন সচেতনতা দেখা যায়নি। মাস্ক না পড়ার এ বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

মাসব্যাপী মেলায় এবার দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কসমেটিকস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ-সামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিজাত খাদ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে।

বাণিজ্যমেলা প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে খোলা থাকছে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। মেলার প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের ৪০ টাকা ও শিশুদের ২০ টাকা। এছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড ফ্লাইওভার থেকে মেলা প্রাঙ্গণে যাতায়াতের জন্য ৩০টি বিআরটিসির বাস চলবে। ভাড়া জনপ্রতি ৩০ টাকা। ইপিবি জানিয়েছে, দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়লে বাসের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।

এসব বিষয়ে মেলার পরিচালক ও বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচীব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, এ বছর প্রথমবার জমেছে এ মেলা। এ বছরের যেসব ত্রুটি থাকবে সামনে তা থাকবে না।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৭ জানুয়ারি, ২০২২)