‘মাসুদ রানা’ খ্যাত কাজী আনোয়ার হোসেন আর নেই
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: লেখক, অনুবাদক, প্রকাশক ও জনপ্রিয় মাসুদ রানা সিরিজের স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন মারা গেছেন। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
গত ৩১ অক্টোবর তার প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়ে। এ সময়ের মধ্যে তাকে পাঁচ দফা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তবে তার চিকিৎসার খুব একটা সুযোগ পাওয়া যায়নি। পরপর ব্রেইন স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের পর গত ১০ জানুয়ারি থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
কাজী আনোয়ার হোসেনের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৯ জুলাই ঢাকায়। তার পুরো নাম কাজী শামসুদ্দিন আনোয়ার হোসেন। ডাক নাম 'নবাব'। তার পিতা প্রখ্যাত বিজ্ঞানী, গণিতবিদ ও সাহিত্যিক কাজী মোতাহার হোসেন, মাতা সাজেদা খাতুন।
সেবা প্রকাশনীর কর্ণধার হিসেবে তিনি ষাটের দশকের মধ্যভাগে মাসুদ রানা নামক গুপ্তচর চরিত্রকে সৃষ্টি করেন। এর কিছু আগে কুয়াশা নামক আরেকটি জনপ্রিয় চরিত্র তার হাতেই জন্ম নিয়েছিলো। বিদ্যুৎ মিত্র ও শামসুদ্দীন নওয়াব ছদ্মনাম ব্যবহার করেও লিখতেন তিনি।
জগন্নাথ কলেজ থেকে আইএ ও বিএ পাস করে ১৯৬১ সাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এমএ করেন আনোয়ার হোসেন।
পড়াশুনা শেষ হওয়ার পর রেডিওতে তিনি নিয়মিত গান গাইতে শুরু করেন। নিয়মমাফিক কোনো প্রশিক্ষণ না নিলেও বাড়িতে গানের চর্চা সবসময় ছিলো। তিনি ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বেতারের সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন।
১৯৬২ সালে কণ্ঠশিল্পী ফরিদা ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন। কিন্তু রেডিও কিংবা টিভিতে গান গাওয়া এবং সিনেমার প্লেব্যাক কাজী আনোয়ার হোসেন ছেড়ে দেন ১৯৬৭ সালে।
১৯৬৩ সালের মে মাসে বাবার দেয়া দশ হাজার টাকা নিয়ে সেগুনবাগিচায় প্রেসের যাত্রা শুরু করেন। দুজন কর্মচারী নিয়ে সেগুনবাগান প্রেসের শুরু, যা পরবর্তীকালে নাম পাল্টে হয় সেবা প্রকাশনী।
পরবর্তীতে তার প্রকাশনা সংস্থা বাংলাদেশে পেপারব্যাক গ্রন্থ প্রকাশ, বিশ্ব সাহিত্যের প্রখ্যাত উপন্যাসের অনুবাদ এবং কিশোর সাহিত্যের ধারাকে অগ্রসর করার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কাজী আনোয়ার হোসেন-ফরিদা ইয়াসমিন দম্পতির এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। মেয়ে শাহরীন সোনিয়া একজন কন্ঠশিল্পী। বড় ছেলে কাজী শাহনূর হোসেন এবং ছোট ছেলে মায়মুর হোসেন লেখালেখির সাথে যুক্ত।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) তার দাফন সম্পন্ন হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৯ জানুয়ারি, ২০২২)