দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কাগজে কলমে সিলেট সানরাইজার্সের চেয়ে ঢের এগিয়ে ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মুস্তাফিজুর রহমান-নাহিদুল ইসলামরা সেটার প্রমাণও দিয়েছিলেন। তবে ব্যাটাররা সেভাবে নিজেদেরকে মেলে ধরতে পারেননি। মাত্র ৯৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়ে দারুণ প্রতিযোগিতা করলেও শেষ পর্যন্ত ২ উইকেটের কষ্টার্জিত জয়ে বিপিএল শুরু করলো কুমিল্লা।


মাত্র ৯৭ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারে তাসকিন আহমেদের তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে রানের খাতা খোলেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট। তবে এরপর থেকে তাসকিনের বল খেলতে গিয়ে ডেলপোর্ট ও ফাফ ডু প্লেসিকে ভুগতে হয়েছে। নিজের দ্বিতীয় ওভারেও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন তাসকিন।

এদিকে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সোহাগ গাজীর বলে ডেলপোর্টের সহজ ক্যাচ ছাড়েন কেসরিক উইলিয়ামস। ডেলপোর্টকে ফেরাতে না পারলেও দ্বিতীয় ওভারে এসে ডু প্লেসিকে আউট করেছেন গাজী। ডানহাতি এই অফ স্পিনারকে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ২ রানে সাজঘরে ফিরেছেন প্রথমবার বিপিএল খেলতে আসা ডু প্লেসি।


গাজীকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন তিনে নামা মুমিনুল হক। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের পরের ওভারে ছক্কাও মেরেছেন তিনি। ডেলপোর্টকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও সেটা ফলপ্রসূ হয়নি। গাজীর বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে ১৬ রানে আউট হলে ভাঙে তাদের দুজনের জুটি।

এরপর আউট হয়েছেন ১৫ রান করা মুমিনুলও। বাঁহাতি এই ব্যাটারকে মুক্তার আলীর হাতে ক্যাচ বানিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। একই ওভারে আউট হয়েছেন কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল। গাজীকে চার ও ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করা বাঁহাতি এই ব্যাটার সাজঘরে ফিরেছেন ৪ বলে ১০ রান করে।

ছয়ে নামা আরিফুল হক আউট হয়েছেন ৫ বলে ৪ রান করে। এরপর ৫৫ রানে ৫ উইকেট হারানো কুমিল্লাকে টেনে তোলেন নাহিদুল ইসলাম এবং করিম জানাত। তাসকিনের বলে ১৮ রান করে করিম ফিরলে ভাঙে নাহিদুলের সঙ্গে ২৭ রানের জুটি। এরপর ১৬ রানে আউট হয়েছেন নাহিদুলও।

ম্যাচ জিততে শেষ ২৪ বলে কুমিল্লার প্রয়োজন ৯ রান। বিপরীতে সিলেটের প্রয়োজন ছিল ৩ উইকেট। এমন সময় নাজমুল ইসলাম অপুর বলে তুলে মারতে গিয়ে রবি বোপারার দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হয়েছেন শহিদুল ইসলাম। শেষ দিকে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছে কুমিল্লাকে জেতান।

এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি সিলেট। নাহিদুলের অফ স্টাম্পের বাইরের বল কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩ রান করা এনামুল হক বিজয়।

আরেক ওপেনার কলিন ইনগ্রাম আক্রমণাত্বক ব্যাটিং শুরু করলেও তাকে ইনিংস বড় করতে দেননি শহিদুল। ডানহাতি এই পেসারের কোমড় বরাবর বল তুলে মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগ দাঁড়িয়ে থাকা আরিফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ২১ বলে ২০ রান করা ইনগ্রাম।

এদিন থিতু হতে পারেননি মোহাম্মদ মিঠুন-অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং অভিজ্ঞ অলক কাপালি। দুই অঙ্কের কোটা ছোঁয়ার আগেই তারা তিনজন সাজঘরে ফেরেন। ইনগ্রামের মতো রবি বোপারাও ভালো শুরুর পর আউট হয়েছেন ১৭ রানে।

শেষ দিকের ব্যাটাররা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। সোহাগ গাজী ১৯ বলে ১২ রান করলেও দলীয় রান ১০০ পার করতে পারেনি সিলেট। ৫ বল বাকি থাকতেই মাত্র ৯৬ রানে অল আউট হয় তারা। কুমিল্লার হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ, নাহিদুল এবং শহিদুল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট সানরাইজার্স- ৯৬/১০ (১৯.১ ওভার) (ইনগ্রাম ২০, বোপারা ১৭, মুস্তাফিজ ২/১৫, শহিদুল ২/১৫, নাহিদুল ২/২০)

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- ৯৭/৮ (১৮.৪ ওভার) (করিম ১৮, নাহিদুল ১৬, ডেলপোর্ট ১৬, মুমিনুল ১৫, মোসাদ্দেক ২/১০, গাজী ২/৩০)

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২২ জানুয়ারি, ২০২২)