দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল জুড়ে গত চার বছরের মধ্যে এই প্রথম ভয়ঙ্কর এক তুষারঝড় মোকাবেলা করতে দেশটি প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঝড়ের পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে এটি ক্যারোলাইনা থেকে মেইন অঙ্গরাজ্য পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।

ঝড়ের তীব্রতার কথা বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।

যে বোস্টন শহর প্রায়শই তুষারঝড়ের কবলে পড়ে থাকে তার মেয়র মিশেল উ বলেছেন আসন্ন ঝড়টি "ঐতিহাসিক" হতে পারে।

বলা হচ্ছে নিউ ইংল্যান্ড রাজ্য দুই ফুটেরও বেশি গভীর বরফের নিচে ঢাকা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া কর্মকর্তারা পূর্ব উপকূল জুড়ে বন্যার ব্যাপারেও সতর্ক করে দিয়েছেন।

পূর্বাভাস দিতে গিয়ে তারা বলছেন নরইস্টার নামে পরিচিত এই ঝড়ে বোস্টন অঙ্গরাজ্য ৬১ সেন্টিমিটার পুরু বরফের নিচে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এর আগে ২০০৩ সালে এরকম এক ঝড়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে ৭০ সেন্টিমিটার পুরু রেকর্ড পরিমাণ বরফ পড়েছিল। শুক্র থেকে রবিবারের মধ্যে পাঁচ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঝড়ের তীব্রতা এতো দ্রুত বৃদ্ধি পাবে যে পূর্ব উপকূল জুড়ে বম্বোজেনেসিস পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ঝড়ের ঠাণ্ডা বাতাস যখন সমুদ্রের উষ্ণ বাতাসের সঙ্গে মিশে বায়ুমণ্ডলের চাপ দ্রুত গতিতে হ্রাস পায় তখন সেই পরিস্থিতিকে বলা হয় বম্বোজেনেসিস।

বলা হচ্ছে এর ফলে ভয়ঙ্কর ধরনের সাইক্লোনের সৃষ্টি হতে পারে যা 'বোম্ব সাইক্লোন' হিসেবে পরিচিত। বোস্টনের আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, ঝড়ের ফলে যোগাযোগ ও ভ্রমণ সীমিত হয়ে পড়তে পারে।

"যদি বাইরে বের হতেই হয়, তাহলে জরুরি কিট সাথে রাখতে হবে। আর কেউ যদি কোথাও আটকা পড়ে যায় তাহলে তিনি যেন গাড়ির ভেতরেই অবস্থান করেন।"

শনিবার সকাল থেকেই শক্তিশালী এই ঝড়ের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে ইতোমধ্যে তুষারপাত শুরু হয়ে গেছে।

ধারণা করা হচ্ছে বাতাসের গতি আরো তীব্র হবে এবং সেটি ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রায় পৌঁছানোরও সম্ভাবনা রয়েছে।

উত্তর-পূর্ব উপকূল জুড়ে ইতোমধ্যে তুষারঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেখানে ২০১৮ সালের পর এই প্রথম এধরনের সতর্কতা জারি করা হলো।

নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, ম্যারিল্যান্ড, রোড আইল্যান্ড এবং ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নররা তাদের রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। নিরাপত্তার জন্য বাসিন্দাদের রাস্তায় বের না হতেও তারা সতর্ক করে দিয়েছেন।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যম বলছে ঝড়টি যে পথ ধরে অগ্রসর হবে সেখানে সাড়ে সাত কোটি মানুষের বসবাস। নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস শনিবারে টিকা দেওয়ার মতো আরো কিছু কর্মসূচি বাতিল করেছেন।

নিউ ইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর তার বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এই ঝড়ের প্রভাব ফ্লোরিডাতেও গিয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৯ জানুয়ারি, ২০২২)