শেয়ার প্রতি আয় ও নগদ প্রবাহ বেশী দেখিয়েছে মোজাফফর স্পিনিং
মাহি হাসান, দ্য রিপোর্ট : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিং মিলের বিরুদ্ধে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) এবং শেয়ার প্রতি নেট পরিচালন নগদ প্রবাহ বা এনওসিএফপিএস - এর হিসেব বেশী দেখানোর প্রমাণ পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিং মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়েছে ডিএসইর সিজিআরএফ ডিপার্টমেন্ট। গত ১৭ জানুয়ারি ইস্যু করা চিঠিতে প্রথম প্রান্তিকের (২০২১ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) এ শেয়ার প্রতি আয় এবং শেয়ার প্রতি নীট নগদ আন্তঃপ্রবাহের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সম্পর্কে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। কোম্পানিটির হিসেবের এই অস্বাভাবিক উল্লম্ফন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হাজারো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
মোজাফফর হোসেইন স্পিনিং মিল গত ১৫ নভেম্বর প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনটিতে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দেখায় দশমিক ২৪ পয়সা। যেটি কিনা আগের বছর একই সময়ে ছিলো ঋণাত্মক দশমিক ৪২ পয়সা। অর্থাৎ ১৫৭ দশমিক ১০ শতাংশ বৃদ্ধি দেখানো হয়।
পরবর্তী সময়ে গত ১৯ জানুয়ারি কোম্পানিটি দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে ইপিএস দেখানো হয় দশমিক ৭৩ পয়সা যা বিগত বছরে (২০২০) এ একই সময়ে ছিলো দশমিক ০৩ পয়সা।
বিএসইসি প্রজ্ঞাপনের ৪(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শেয়ার মার্কেটে এত বিশাল পার্থক্যের ক্ষেত্রে ব্যাখা দিতে হয় কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে। কোম্পানিটি কোন ধরণের ব্যাখ্যা প্রদান করেনি শেয়ার প্রতি আয়ের এতো বিশাল উল্লফনের।
চিঠিটিতে উল্লেখিত আরেকটি বিষয় হচ্ছে শেয়ার প্রতি নীট নগদ আন্তঃপ্রবাহের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে শেয়ার প্রতি নগদ আন্তপ্রবাহ দেখানো হয় ১টাকা ০৯ পয়সা যা পূর্ববর্তী বছরে একই সময়ে ছিলো ঋণাত্মক ২ টাকা ২৫ পয়সা। ১৪৮.৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএসইসি নির্দেশনা মেনে অস্বাভাবিক বিচ্যুতির ব্যাখা দেওয়া প্রয়োজন । কিন্তু মোজাফফর হোসেইন স্পিনিং মিলের পক্ষ থেকে এ ধরণের কোনো ব্যাখ্যা প্রদান করা হয় নি । ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সিজিএফআরসি ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ম্যানেজার আব্দুল কাদের স্বাক্ষরিত নোটিশটিতে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তাদের অবস্থান পরিস্কার করতে বলা হয়।
ইপিএস এবং শেয়ার প্রতি নগদ আন্তঃপ্রবাহের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সম্পর্কে কোম্পানি সচিব হারিস আলম দ্য রিপোর্টকে বলেন, তাদের ইউনিট বৃদ্ধি পাওয়ায় সব কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে। চিঠির ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন চিঠির জবাব যথাসময়ে দেয়া হয়েছে। ইউনিট বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়া এছাড়া অন্য কোন কারণ নেই বলে তিনি দাবি করেন।
২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে আসা বস্ত্র খাতের পরিশোধিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। কোম্পানিটিতে বর্তমানে ৩৯ দশমিক ৬১ শতাংশ রয়েছে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার। প্রাতিষ্ঠানিক ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ বিনিয়োগ রয়েছে। সাধারন বিনিয়োগকারীর শেয়ার রয়েছে ৩৯ দশমিক ১১ শতাংশ শেয়ার। এ বছর কোম্পানিটি ৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
সর্বশেষ কার্যদিবসে (বৃ্হস্পতিবার) শেয়ারটির মুল্য ৩১টাকা ২০ পয়সা দিয়ে দিন শেষ হয়। এদিন ৮ লাখ ৬২হাজার ৩১৬ টি শেয়ার ৪৬৫ বার হাতবদল হয়। বুধবার দিনের শেষে শেয়ারটির মূল্য ছিলো ৩১ টাকা ৪০ পয়সা।
(দ্য রিপোর্ট/মা হা/ আরজেড/০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২)