যে কারণে বিয়ে করেননি লতা মঙ্গেশকর
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: লতা মঙ্গেশকরের জীবন প্রদীপ নিভে গেছে। এই কোকিলকণ্ঠীর চিরপ্রস্থানে ভারতীয় সংগীতের ইতিহাসে একটি সুরেলা অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো। তিনি চলে গেলেও তার গান রয়ে যাবে মানুষের হৃদয়ে।
৯২ বছরের দীর্ঘ জীবনকে কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করেননি লতা মঙ্গেশকর। চিরকুমারী ছিলেন তিনি। তার মতো এমন একজন সফল ব্যক্তিত্ব কেন কাউকে জীবনসঙ্গী করলেন না, সে প্রশ্নটি সবার মনেই আসে।
গুঞ্জন ছিল- রাজস্থানের (তৎকালীন রাজপুতনা) দুঙ্গরপুরের রাজ ঘরানার মহারাজ রাজ সিং-এর প্রেমে পড়েছিলেন লতা। যিনি সম্পর্কে লতার বড় ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। কিন্তু তার সেই ভালোবাসা পূর্ণতা পায়নি। প্রেমে সফল হননি বলেই কারও সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধাও হয়নি এই কিংবদন্তির।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রের খবরে বলা হয়- লতার থেকে ৬ বছরের বড় রাজ সিং আদর করে তাকে মিট্টু বলে ডাকতেন। পকেটে সবসময় একটি রেকর্ডার নিয়ে ঘুরতেন রাজ সিং। সেই রেকর্ডারের মধ্যে থাকতো লতা মঙ্গেশকরের বিখ্যাত কিছু গান। কিন্তু রাজ ঘরানার ছেলে রাজ সিং তার বাবা-মায়ের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, কোনো সাধারণ ঘরের মেয়েকে তিনি রাজবংশের বউ করে আনবেন না। সেই প্রতিজ্ঞা বজায় রেখেছিলেন রাজ সিং। তিনিও বিয়ে করেননি। ২০০৯ সালে প্রয়াত হন চিরকুমার রাজ সিং।
তবে চিরকুমারী থাকার কারণ হিসেবে রাজ সিংয়ের প্রেমে পড়ার বিষয়টি সামনে আনা হলেও লতা মঙ্গেশকরের দাবি ছিল ভিন্ন। বিভিন্ন সময়ে তার ভাষ্য ছিল, সংসারের দায়িত্ব কাঁধে থাকার কারণেই তিনি নিজেকে নিয়ে কোনোদিন আলাদা করে ভাবার সুযোগ পাননি।
লতার বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর মাত্র ৪২ বছর বয়সে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর কে ধরবে সংসারের হাল, এ চিন্তায় লতার মা সুধামতী দিশেহারা। শেষ পর্যন্ত দায়িত্বটা এসে পড়ে ১২ বছরের মেয়ে লতার কাঁধে। বাবার মৃত্যুর মাত্র সাতদিন পরই শোক লুকিয়ে লতা ‘প্যাহলি মঙ্গলাগাঁও’ ছবির শুটিংয়ে যান। মারাঠি এ ছবিটিতে অভিনয় করে আর গান গেয়ে ক্যারিয়ার শুরুর পাশাপাশি জীবন সংগ্রামটাও শুরু করেন কিংবদন্তি এই শিল্পী। আর তাই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চিরকুমারিই রয়ে গেলেন লতা মঙ্গেশকর।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২)