দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ‘হুজুর আপনার পায়ে ধরি। আমারে আর মাইরেন না। আমি আর অনুপস্থিত থাকুম না।’ এভাবে কাকুতি জানিয়েও মাইরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি আসিফুল ইসলাম বিজয় (১৬) নামের এক শিক্ষার্থী। তাকে পিটিয়ে আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন শিক্ষক। 

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজীরচর ইউনিয়নের পূর্ব খড়িয়া গ্রামের নূর হেরা নূরানী তালিমুল কোরআন হাফিজিয়া মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। মাদরাসায় অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে ওই শিক্ষার্থীকে সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পিটিয়ে আহত করেন হাফেজ মো. আমানুল্লাহ নামের এক শিক্ষক।

গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে আহত আসিফকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আসিফ উপজেলার পূর্ব খড়িয়া গ্রামের খলিলুর রহমান খোকনের ছেলে। এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত ওই শিক্ষক।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আসিফের পরিবারের সদস্যরা জানায়, সম্প্রতি এক দিন মাদরাসায় অনুপস্থিত থাকায় সোমবার দুপুরে শিক্ষক হাফেজ মো. আমানুল্লাহ তাকে ডেকে নিয়ে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটান। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে আসিফ। শিক্ষকের পা ধরে ক্ষমা চায় সে। তবু মেরে আহত করেন শিক্ষক। আসিফ গুরুতর আহত হলে পরে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা তাকে বাড়িতে রেখে আসে।

আসিফ বলে, ‘খুব বলেছি, হুজুর আমারে আর মাইরেন না, তার পরও মারা বাদ দেয় নাই। শেষে পা ধরেছি। একপর্যায়ে আমার বুকে লাথি মারে। বুকটা ব্যথা করতাছে। পিঠটা খুব জ্বলতাছে।’

আসিফের বাবা খলিলুর রহমান খোকন বলেন, ‘কোরআনে হাফেজ শিক্ষার জন্য ওই মাদরাসায় দিছি। যেভাবে মারছে এভাবে মানুষ পশুকেও মারে না। ’

শেরপুর জেলা শাখা ‘আমাদের আইন’-এর চেয়ারম্যান নূর-ই-আলম চঞ্চল বলেন, ‘খুবই ন্যাক্কারজনক একটি কাজ। ওই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

জেলা সদর হাসপাতাল ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল অফিসার হুমায়ুন আহমেদ নূর বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রেখেছি। চিকিৎসা চলছে।’

শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২)