অতিরিক্ত ঋণ নিয়েছে কে এন্ড কিউ,ব্যাখা চেয়েছে বিএসইসি
মাহি হাসান, দ্য রিপোর্ট: শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ও নেট এসেট ভ্যালু(এনএভি) বেশী করে দেখানো হলেও অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণ করে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে পুজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কে এন্ড কিউ বাংলাদেশ লিমিটেড ।
প্রকৌশল খাতের কোম্পানি কে এন্ড কিউ বাংলাদেশ লিমিটেড ৩ কোটি ১ লাখ ৬ হাজার টাকা স্বল্পমেয়াদী ঋণ নিয়েছে। যা কিনা আগের বছর ছিলো ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭ হাজার টাকা। স্বল্পমেয়াদী ঝণের এতো বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আ্যন্ড একচেঞ্জ কমিশন(বিএসইসি)।
গত ৩০ জানুয়ারি কোম্পানিটি অনিরীক্ষিত দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর- ডিসেম্বর) প্রকাশ করে। অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন মতে ইপিএস ( শেয়ার প্রতি আয়) দেখানো হয়েছে দশমিক শুণ্য নয় পয়সা। যা আগের বছরএকই সময়েরদ্বিতীয় প্রান্তিকে ছিলো দশমিক বাইশ পয়সা। অর্থাৎ আগের তুলনায় ইপিএস বেড়েছে ১৩ পয়সা।
প্রথম দুই প্রান্তিকের সম্মিলিত নিট পরিচলন নগদ আন্তঃপ্রবাহ প্রতি শেয়ারে (এনওসিএফপিএস) রেকর্ড করা হয়েছে দশমিক ষোল পয়সা । যা আগের বছর ছিলো দশমিক ছত্রিশ পয়সা । অর্থাৎ এনওসিএফপিএস কমেছে বিশ পয়সা।
নিট আ্যসেট ভ্যালু (এনএভি) প্রথম দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৭৭ টাকা ১৯ পয়সা রেকর্ড করা হয়েছে। যা পূর্ববর্তী বছরে ছিলো ৭৬ টাকা ৭৪ পয়সা।
অর্থাৎ, কে এন্ড কিউ বাংলাদেশ লিমিটেডের এনএভি এবং ইপিএস দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপরেও কোম্পনিটির স্বল্পমেয়াদী ঋণের পরিমাণ কেনো এতো বৃদ্ধি পেয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছে কমিশন।
কে এন্ড কিউ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে আরও বলা হয় কোম্পানিটির সহোযোগি বা অন্যান্য ঋণ রয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। পাশাপাশি এই আর্থিক বছরে দ্বিগুণের বেশি নতুন স্বল্পমেয়াদী ঋণ। সিকিউরিটিজ আ্যন্ড একচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ সালেরধারা ১১(২) অনুসারে কোম্পানিটিকে চিঠি ইস্যুর ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বিগত ৩ বছরের ঋণের খরচের প্রমাণ জমা দিতে বলা হয়।
২০২০ সালে কে আ্যন্ড কিউ কোম্পানিটি সর্বশেষ ৪% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে।২০১৯ সালে কোম্পানিটি ৭.৫% এবং ১৮ সালে ঘোষণা করেছিল ৫% নগদ লভ্যাংশ।
প্রায় ৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে পুঁজিবাজারে আসা প্রকৌশল খাতের এই কোম্পানিটির সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে(ডিএসই) শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩ টাকা ৩ পয়সা বা ১.২১ শতাংশ। দিনের শুরুতে দর ছিলো শেয়ারটির ২৭২ টাকা । দিন শেষ হয় ২৭৫ টাকা ৩০ পয়সা। সপ্তাহের প্রথম দিন ১৩৩ কোটি ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার মোট ৩০৫ বার হাতবদল হয়।
এ ব্যাপারে কথা বলতে কোম্পানিটির সচিব মেহেদী হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হয়। গতকাল বিকেলে দ্য রিপোর্টকে তিনি বলেন কার্যকরী মূলধনের স্বল্পতার কারণে এই ঋণ নেওয়া হয়েছিল। বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে নয়। কার্যকরী মূলধনের অভাব মেটানোর পাশাপাশি কোম্পানি সম্প্রসারণের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে ঋণকৃত অর্থ।
১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে আসা কে আ্যন্ড কিউয়ের ৩১.৮৮শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। এছাড়া ৮.০২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৬০.১০ শতাংশ শেয়ার। কোম্পানিটিতে বিদেশী এবং সরকারি কোন শেয়ার নেই। উল্লেখ্য, ডিএসই ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য মতে গত ১ বছরে কে আ্যন্ড কিউ এর শেয়ারের দর প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
( দ্য রিপোর্ট/ মা হা/ টিআইএম/১৩ ফেব্রুয়ারি,২০২২)