লঞ্চ দুর্ঘটনা, ১৭ বছরেও থামেনি কান্না
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আজ ভয়াল সেই ১৯ ফেব্রুয়ারি। চাঁদপুরে এম ভি মহারাজ লঞ্চ দুর্ঘটনার ১৭ বছর পূর্তি। ২০০৫ সালের আজকের এই দিনে ঢাকা সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা চাঁদপুরের মতলবগামী এম ভি মহারাজ লঞ্চটি প্রায় আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে রওনা হলে নারায়ণগঞ্জের পাগলা নামক স্থানে আসার পর এক ভয়াবহ ঝড়ের কবলে পড়ে লঞ্চটি উল্টে পানিতে ডুবে যায়।
এতে লঞ্চে থাকা প্রায় দু’শতাধিক বিভিন্ন বয়সী নারী ও পুরুষ প্রাণ হারায়। লঞ্চটিতে মতলব দক্ষিণ ও উত্তর উপজেলার যাত্রী ছাড়াও চাঁদপুর, শরীয়তপুর, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার যাত্রী ছিল। লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত স্বজনদের কান্না আজও থামেনি।
মতলববাসীর জন্য আজকের দিনটি হচ্ছে শোকাহত একদিন। লঞ্চ দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের মধ্যে ছিলেন নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, তার কন্যা মতলব কচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী শিলাত জাহান অর্থি, উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই মাস্টার, আইসিডিডিআরবির ডাক্তার মো. মাসুম, দগরপুরের প্রকৌশলী ফারুক দেওয়ান, মতলব বাজারের সার ব্যবসায়ী ইয়াসিন মৃধা, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তা ফারুক দেওয়ানসহ স্বপরিবার, দশপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলাম, বাইশপুর গ্রামের ছোট খোকন ও বড় খোকন, মতলব উত্তরের বারহাতিয়া গ্রামের ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী শাহআলমসহ নাম জানা অজানা অনেকের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত মরদেহগুলো তখন মতলব দক্ষিণ থানার সামনে সারিবদ্ধভাবে তাবু টানিয়ে রাখা হয়েছিল। মৃত ব্যক্তিদের স্বজনদের আহাজারিতে পুরো মতলবে শোকের মাতম নেমে আসে। অধিকাংশ লাশের মুখমণ্ডল ও শরীর গলে যাওয়ায় তাদের চিনতে আত্মীয় স্বজনদের হিমশিম খেতে হয়েছিল। লাশের পরনে থাকা পোশাক এবং জন্মগত কোনো চিহ্ন দেখে অনেক মরদেহ চিহ্নিত করেছে স্বজনরা। আর যে সকল লাশের কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি তাদের ছবি তুলে তাদের মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে ঢাকিরগাঁও রিয়াজুল জান্নাত কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এম ভি মহারাজ লঞ্চ দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া মতলব উত্তর উপজেলার লুধুয়ার তোফায়েল পাটোয়ারী বলেন, এমন পরিস্থিতিতে থেকে বেঁচে আসা মোটেই সম্ভব ছিল না। আল্লাহ্ দয়া করেছেন বলেই আমি বেঁচে আছি। এই ঘটনা বলার ভাষা আমার কাছে নেই।
এদিকে, লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহতের স্মরণে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মতলব সূর্যমুখী কচি-কাঁচা মেলার উদ্যোগে অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্রী শিলাত জাহান অর্থিসহ সকল নিহতদের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২)