দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিবিসি’র কিয়েভ সংবাদদাতা জেমস ওয়াটারহাউজ জানিয়েছেন ইউক্রেনের একজন সরকারি কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত হওয়া রুশ সেনা অভিযান সম্পর্কে তাদের ধারণা দিয়েছেন।

ঐ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আজ সকালে কিয়েভে ক্রুজ মিসাইল আক্রমণ করা হয়েছে। দেশটির দক্ষিণে ওদেসা অঞ্চলে সেনা সদস্যদের আগ্রাসনের খবরও পাওয়া গেছে।

হামলার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজেও।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেনের অনেক অবকাঠামো এবং সীমান্তরক্ষীদের ওপর মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।

ইউক্রেনের পরিস্থিতি কভার করছেন এমন একজন অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিকের একটি ভিডিওটি সবচেয়ে সাম্প্রতিক। ব্রায়ান উইলসন তার লাইভস্ট্রিম শেয়ার করতে টুইটারে গিয়েছিলেন যেখানে ইউক্রেনে তার মাথার উপর দিয়ে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে যায়।

এখন ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে, উইলসনকে বলতে শোনা যায় যে তিনি বিশ্বাস করতে পারেন না যে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে কিন্তু হঠাৎ করেই সে উড়ন্ত বস্তুটি দেখে এবং চিৎকার করে বলে, "এটি একটি ক্ষেপণাস্ত্র! এটি একটি ক্ষেপণাস্ত্র! "

ভিডিওটি মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইটে সুপার ভাইরাল হয়েছে এবং পোস্ট করার পর থেকে কয়েক মিনিটের মধ্যে এক মিলিয়নেরও বেশি ভিউ সংগ্রহ করেছে। যারা ভিডিওটির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন, তাদের কাছে এটি লাইভ স্ট্রিম করা হয়েছে তা কোনো বিভ্রান্তি দূর করে। একজন ব্যবহারকারী স্পষ্ট করে বলেছেন, "আমি আক্ষরিক অর্থেই এই লাইভ অন ব্রাইস স্ট্রিম দেখেছি। তিনি প্রায় ২ ঘন্টা লাইভ স্ট্রিম করেছেন, এটি মঞ্চস্থ করা হয়নি।"

এদিকে ইউক্রেনে হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেনের শহরগুলোতে হামলার কথা অস্বীকার করেছে দেশটি। মস্কোর দাবি, ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো ও স্থাপনাগুলোকেই লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে রুশ বার্তাসংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, কোনো ইউক্রেনীয় শহরে হামলা চালানো হচ্ছে না। নির্ভুলভাবে আক্রমণ করতে সক্ষম অত্যাধুনিক সব অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং বিমান বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা করা হচ্ছে।

এদিকে বিদ্যমান এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে সামরিক আইন জারি করতে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বিবিসি বলছে, প্রেসিডেন্টের এই আহ্বানের পর দেশে সামরিক আইন জারির বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে শিগগিরই ওই পরিষদ বৈঠকে বসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চলে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন। কিছুক্ষণ আগে এ ঘোষণা দেন তিনি। পুতিনের এ ঘোষণা দেওয়ার ভাষণটি যখন টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছিল একই সময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক চলছিল; যেখানে তাকে থামানোর আহ্বান জানানো হয়।

একই তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবাও। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেনে মাত্রই পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।’

তিনি আরও বলেছেন, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেন রুখে দাঁড়াবে এবং বিশ্বকে অবশ্যই পুতিনকে থামাতে হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২)