রাজধানী কিয়েভের প্রান্তে রুশ সৈন্যরা
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: রুশ সৈন্যরা রাজধানী কিয়েভ থেকে ২০ মাইল দূরে আন্তোনভ বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে কিয়েভের উত্তর-পশ্চিম উপকন্ঠে সাঁজোয়া যানসহ ইউক্রেন সৈন্যদের একটি দল অবস্থান করছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলছে একটি বিমান ঘাঁটির দখল নিয়ে রুশ সৈন্যদের সাথে লড়াই চলছে।
বিমান ঘাঁটির কাছাকাছি এলাকা থেকে করা মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক সিএনএনের লাইভ রিপোটিং চলার সময় রুশ প্যারাট্রুপারদের চোখে পড়ছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে তারা পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
তবে পশ্চিমা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন তারা যা ধারনা করেছিলেন রুশ সৈন্যরা তার চেয়ে দ্রুত গতিতে অগ্রসর হচ্ছে।
রাশিয়া এখন কী করবে?
বিবিসির কূটনৈতিক সংবাদদাতা পল অ্যাডামস বলছেন কিয়েভের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এখন রুশ প্যারাট্রুপাররা হয়ত অগ্রসরমান রুশ সাঁজোয়া বাহিনীর জন্য অপেক্ষা করবে নতুবা ঐ ঘাঁটি থেকে নিজেরাই কিয়েভের ওপর হামলা শুরু করবে। ব্যাপারটি যে কোনো সময় ঘটতে পারে।
কিয়েভে এখন কারফিউ। রুশ বিমান হামলার ভয়ে মাঝে মধ্যে সাইরেন বাজছে। মানুষজনকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হচ্ছে। অনেকে পাতাল রেল স্টেশনগুলোতে গিয়ে বসে আছেন। সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ কিয়েভ ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন।
যুদ্ধের সর্বশেষ খবর অনুয়ায়ি ইউক্রেন বলছে তাদের অন্তত ৪০জন সৈন্য মারা গেছে, এবং তিরিশ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ মারা গেছে। এরমধ্যে ওডেসা বন্দরের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৮ জন মারা গেছে বলে বলা হচ্ছে।
পাশাপাশি, ইউক্রেন সেনাবাহিনী দাবি করেছে তারা প্রায় ৫০জন রুশ 'দখলদারকে' গুলি করে হত্যা করেছে এবং ছয়টি রুশ বিমান গুলি করে নামিয়েছে, যদিও নিরপেক্ষভাবে এ দাবি যাচাই করা যায়নি।
রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গায় সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপরহামলা চালিয়েছে।
পশ্চিম ইউক্রেনের একটি বিমানবন্দরের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সত্যতা বিবিসি যাচাই করতে পেরেছে। এর আগে মস্কো বলেছিল তারা সামরিক লক্ষ্যবস্তু এবং কয়েকটি বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কিয়েভ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং দেশটির পশ্চিমে ইভানো-ফ্র্যাকিভস্ক বিমানবন্দর।
পূর্ব ইউক্রেনেও তুমুল লড়াই হচ্ছে বলে খবর আসছে। দেশটির দ্বিতীয় বড় শহর খারকিভের বাসিন্দারা বলছেন দুই পক্ষের মধ্যে গোলাবিনিময় এবং অনবরত বিস্ফোরণে তাদের ভবনের জানলাগুলো কাঁপছে।
এদিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাবরভ রুশ সরকারি সংবাদ সংস্থাই আইআরএকে বলেছেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালালেও রাশিয়া সবসময় আলোচনার জন্য প্রস্তুত। দুঃখের বিষয় এই যে আমাদের পশ্চিমা বন্ধুরা আন্তর্জাতিক আইনকে মর্যাদা দেননা। বরঞ্চ তারা তাকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করছেন এবং তাদের গড়া ‘আইন-ভিত্তিক বিশ্ব ব্যবস্থা’ বাস্তবায়নে চেষ্টা করে চলেছেন।
তিনি বলেন, আমেরিকান সহকর্মীদের সাথে আমাদের বিস্তারিত কথা হয়েছে। নেটো সদস্যদের সাথেও কথা বলেছি। আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক দায়-দায়িত্ব অনুসরণের পথ এখনো খোলা রয়েছে। ন্যায়বিচার এবং জাতিসংঘ চার্টারের মূল নীতিতে ফেরার জন্য যে কোনো আলোচনায় বসার জন্য রাশিয়া সবসময় প্রস্তুত থাকবে। সূত্র: বিবিসি
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২)