দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শেয়ারবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, কিছু তালিকাভুক্ত উৎপাদনী কোম্পানি মূল ব্যবসাকে পাশ কাটিয়ে শেয়ার ব্যবসা করছে। তা দিয়ে ভালো ইপিএস দেখিয়ে শেয়ার দর ৬০০-৭০০ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখানে মুনাফা যেমন দ্রুত হয়, লোকসানও একইভাবে আসে। তাই এখনকার অস্বাভাবিক মুনাফা একসময় লোকসানে পতিত হতে পারে। তাই শেয়ার ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোকে কমিশনের নজরদারিতে আনা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিলকুশাস্থ হোটেল পূর্বাণীতে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এবং বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটি মার্কেটের (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে ‘পুঁজিবাজারে মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির প্রভাব’ শীর্ষক কর্মশালায় প্যানেল আলোচক বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ এবং প্যানেল আলোচক হিসেবে বিএসইসির সাবেক কমিশনার আরিফ খান, অধ্যাপক মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন, বিআইবিএমের শাহ মোহা আহসান হাবীব ও সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন বিএএসএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী।

যেসব কোম্পানি শেয়ার ব্যবসা করে অস্বাভাবিক ইপিএস দেখাচ্ছে, সেগুলো ওই ইপিএস দিয়ে লভ্যাংশ দিতে পারবে বলে মনে করেন না অধ্যাপক আবু আহমেদ।

তিনি বলেন, সরকার শেয়ারবাজারের জন্য অনেক কিছু করেছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে শেয়ারবাজার পরিপন্থী অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যে করমুক্ত লভ্যাংশের আকার ১ লাখ থেকে কমিয়ে ৫০ হাজার করেছে, ২০ শতাংশ বা তার বেশি নগদ লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানির কর ছাড়ের সুবিধা বাতিল, অতালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে গ্রামীণফোনের কর ব্যবধান ১০% থেকে কমিয়ে ৫% আনা, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান ১০% থেকে কমিয়ে ৭.৫% আনার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আইপিও কোটার সুযোগ নেওয়ার জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান নামওয়াস্তে আরজেএসসি থেকে রেজিস্ট্রেশন নিয়েছে বলে দাবি করেছেন এই শেয়ারবাজার বিশ্লেষক। যাদের শেয়ারবাজারে ভূমিকা নেই। তিনি বলেন, ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করলেই প্রতিষ্ঠানের যোগ্য বিনিয়োগকারী হওয়া যায়। এর মাধ্যমে তারা আইপিওর সুযোগ নিচ্ছে। কিন্তু আমার মতো অনেকেই আছেন, যাদের শেয়ারবাজারে ১ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ থেকেও তা পাচ্ছেন না। আমরা যদি আইপিওতে ৫০টি শেয়ার পাই, যোগ্য বিনিয়োগকারীরা পাচ্ছেন ৫ হাজার। এই বৈষম্য দূর করতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের বাধ্যবাধকতা আরোপের কথা বলেন তিনি। অন্যথায় কোটা সুবিধা কমানোর দাবি করেন তিনি।

আবু আহমেদ বলেন, লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসি খোলার থেকে শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানিতে ৫-১০ বছর বিনিয়োগে বেশি রিটার্ন পাওয়া যাবে। এছাড়া প্রয়োজনের সময় টাকাও দ্রুত তুলে নেওয়া যাবে।

মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বেহাল দশার পেছনে অ্যাসেট ম্যানেজারদের আস্থা কম বলে জানান আবু আহমেদ। এসময় তিনি বলেন, সব ফান্ড ম্যানেজারদের জন্য একই হারে কমিশন দেওয়া ঠিক না। ফান্ডের পারফরমেন্সের উপর কমিশন নির্ধারন করা উচিত। এতে করে যারা ভালো করে তারা আরও উৎসাহিত হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২)