যুদ্ধের আটদিনে সুচক কমেছে ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ
শেয়ারবাজারে ধস, মার্জিন ঋণের সুদের ভয়ে বিক্রির চাপ বৃদ্ধি
মাহি হাসান,দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আজ সোমবার (৭ই মার্চ) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে(ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৯২ টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ৩৬৪টির । দাম বেড়েছে মাত্র ৭ টি কোম্পানির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ বা ১৮২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬২৫৬ পয়েন্টে।একদিনে এতগুলো কোম্পানির শেয়ারের দরপতন সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি।মার্জিন ঋণ নেওয়া আতংকিত বিনিয়োগকারীরা সুদের ভয়ে বেশী করে শেয়ার বিক্রি করছেন। পাশাপাশি ব্রোকারেজ হাউজগুলোও ফোর্সড সেল করছে। তাতেই এই পতন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শেয়ার বাজার সংক্রান্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপঘুরে বিনিয়োগকারীদের চরম হতাশার চিত্র দেখা গেছে। কোন কোন বিনিয়োগকারী তুলনা করছেন২০১০ সালের বিশাল ধসের সাথে। ২০১০ সালের ভয়ানক সেই স্মৃতির কথা মনে করছেন কিছু বিনিয়োগকারী। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার দিন ২৪ ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হওয়া এই দরপতন এখনো অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হবার আজ ছিল ৮ম কার্যদিবস।এই আট কার্যদিবসে কমেছে ৩৮১ পয়েন্ট। শতাংশের হিসেবে যা ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ।ঢাকা স্টক একচেঞ্জের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে আজ মাত্র ৭৪০ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে । হাতবদল হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮২ বার। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কেটে এত কম লেনদেন চোখে পড়েনি। ডিএসইসির তিনটি সূচকই ছিল নিম্নমুখী। ডিএসইসির প্রধান সূচক ডিএসইসি এক্স আগের দিনের চেয়ে প্রায় ২ দশমিক ৭৪৩ শতাংশ বা ১৮২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬২৫৬ পয়েন্টে। একই অবস্থা বাকি দুই সূচকেরও। ডিএসই শরিয়া সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট। ডিএসইসি ৩০ সূচক কমেছে ৬৪ পয়েন্ট। ডিএসই শরিয়া এবং ডিএসই ৩০ সূচক অবস্থান করছে যথাক্রমে ১৩৯৪ এবং ২৩৭৪ পয়েন্টে । গতবছর ২৯ জুলাইয়ের পর থেকে এই প্রথম এমন বিপর্যয়ের মুখে দেশের পুঁজিবাজার।বিনিয়োগকারীরা অনেকে মনে করছেন ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে পতন । কিন্তু ডিএসই ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে যুদ্ধ শুরুর দিন সৃচক কমেছিল ১০৯ পয়েন্ট।
উল্লেখ্য সেদিন বিশ্বের সব পুঁজিবাজারের বিশাল ধস নেমেছিল। কিন্তু পরের কার্যদিবসে ঘুরে দাঁড়ায় বিশ্বের অন্যান্য শেয়ার বাজার। ব্যতিক্রম থাকে শুধুমাত্র বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। অন্য পুঁজিবাজারে যেখানে দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল সেখানে ডিএসইতে ২৭ ফেব্রুয়ারি সূচক কমেছিল ১৬৩ পয়েন্ট। সূচক পতনের এই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ নিয়ে টানা ৭ কর্মদিবস এক হাজার কোটি টাকার কম লেনদেন হলো ঢাকা স্টক একচেঞ্জে।
এ ব্যাপারে কথা হয় একজন বিনিয়োগকারীর সাথে। আব্দুল্লাহ সাঈদ নামের ওই বিনিয়োগকারী জানান তার হাতে থাকা সবগুলো শেয়ারের দাম কমেছে। তিনি তার পেনশনের সব টাকা ভেঙ্গে বিনিয়োগ করেছিলেন। সব শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় শেয়ার বিক্রয় করে তিনি এখন পুঁজিহারা। একই অবস্থা অসংখ্য বিনিয়োগকারীর।
শেয়ারবাজারের টানা এই ধসের ব্যাপারে কথা হয় পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদের সাথে। দ্য রিপোর্টকে তিনি বলেন এটি প্যানিক সেল বা আতংকিত বিক্রি । টানা দর পতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আরো দরপতনের আশংকা কাজ করছে। যার ফলে তারা শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছেন। সাধারন বিনিয়োগকারীরা আরও ক্ষতির আশংকায় নিজেদের হাতে শেয়ার রাখছেন না। তিনি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার হাতছাড়া না করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব সরাসরি এই মুহুর্তে পড়া সুযোগ নেই। কিন্তু অন্য কোন একটি ইস্যু কাজ করছে কী না তা খতিয়ে দেখতে বলেন এই অধ্যাপক। আবু আহমেদ আরো বলেন মার্জিন লোন করে যারা মার্কেটে এসেছে তারা কেউ হাতে শেয়ার নিজের হাতে রাখছেন না। মার্জিন লোন করে মার্কেটে আসলে সুদ দিতে হয়। অতিরিক্ত সুদের ভয়ে মার্জিন লোন করে আসা বিনিয়োগকারীরা কমদামে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। শেয়ার বিক্রয়ের এই প্রবণতা না কমলে মার্কেটে স্টাবিলিটি আসার সুযোগ নেই বলে মনে করেন এই পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ।এদিকে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ থেকে ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রি হচ্ছে জানাগেছে। যেসব পোর্ট ফোলিওতে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নেওয়া রয়েছে সেসব পোর্ট ফোলিও খালি করে দিচ্ছে হাউজগুলো। বিক্রির এই চাপেই শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। (দ্য রিপোর্ট / মা হা / টিআইএম/৭ মার্চ,২০২২)
উল্লেখ্য সেদিন বিশ্বের সব পুঁজিবাজারের বিশাল ধস নেমেছিল। কিন্তু পরের কার্যদিবসে ঘুরে দাঁড়ায় বিশ্বের অন্যান্য শেয়ার বাজার। ব্যতিক্রম থাকে শুধুমাত্র বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। অন্য পুঁজিবাজারে যেখানে দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল সেখানে ডিএসইতে ২৭ ফেব্রুয়ারি সূচক কমেছিল ১৬৩ পয়েন্ট। সূচক পতনের এই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ নিয়ে টানা ৭ কর্মদিবস এক হাজার কোটি টাকার কম লেনদেন হলো ঢাকা স্টক একচেঞ্জে।
এ ব্যাপারে কথা হয় একজন বিনিয়োগকারীর সাথে। আব্দুল্লাহ সাঈদ নামের ওই বিনিয়োগকারী জানান তার হাতে থাকা সবগুলো শেয়ারের দাম কমেছে। তিনি তার পেনশনের সব টাকা ভেঙ্গে বিনিয়োগ করেছিলেন। সব শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় শেয়ার বিক্রয় করে তিনি এখন পুঁজিহারা। একই অবস্থা অসংখ্য বিনিয়োগকারীর।
শেয়ারবাজারের টানা এই ধসের ব্যাপারে কথা হয় পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদের সাথে। দ্য রিপোর্টকে তিনি বলেন এটি প্যানিক সেল বা আতংকিত বিক্রি । টানা দর পতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আরো দরপতনের আশংকা কাজ করছে। যার ফলে তারা শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছেন। সাধারন বিনিয়োগকারীরা আরও ক্ষতির আশংকায় নিজেদের হাতে শেয়ার রাখছেন না। তিনি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার হাতছাড়া না করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব সরাসরি এই মুহুর্তে পড়া সুযোগ নেই। কিন্তু অন্য কোন একটি ইস্যু কাজ করছে কী না তা খতিয়ে দেখতে বলেন এই অধ্যাপক। আবু আহমেদ আরো বলেন মার্জিন লোন করে যারা মার্কেটে এসেছে তারা কেউ হাতে শেয়ার নিজের হাতে রাখছেন না। মার্জিন লোন করে মার্কেটে আসলে সুদ দিতে হয়। অতিরিক্ত সুদের ভয়ে মার্জিন লোন করে আসা বিনিয়োগকারীরা কমদামে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। শেয়ার বিক্রয়ের এই প্রবণতা না কমলে মার্কেটে স্টাবিলিটি আসার সুযোগ নেই বলে মনে করেন এই পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ।এদিকে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ থেকে ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রি হচ্ছে জানাগেছে। যেসব পোর্ট ফোলিওতে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নেওয়া রয়েছে সেসব পোর্ট ফোলিও খালি করে দিচ্ছে হাউজগুলো। বিক্রির এই চাপেই শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। (দ্য রিপোর্ট / মা হা / টিআইএম/৭ মার্চ,২০২২)