মাহি হাসান, দ্য রিপোর্ট :বিএসইসির একাধিক পদক্ষেপে দেশের প্রধান পুঁজিবাজারে বেড়েছে শেষ তিনদিনে ২১১ পয়েন্ট । এই উত্থানের আগে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর দিন থেকে টানা আটদিনে ডিএসই প্রধান সূচক হারিয়েছিল ৩৮২ পয়েন্ট।

আজ সপ্তাহের শেষদিন(বৃহস্পতিবার)সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু হতেই দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের(ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়ে যায় ২৮ পয়েন্ট।লেনদেন শুরুর ৪১ মিনিটের মাথায় ডিএসইএক্স সূচক ৬৭৪০ পয়েন্টে চলে যায়।আগেরদিন ডিএসইএক্স দিনের শেষে ছিলো ৬৬৩০ পয়েন্ট।অর্থ্যাৎ৪১ মিনিটের মাথায় বেড়ে যায় ১৪১ পয়েন্ট।বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিলেন আগেরদিনের বৃদ্ধি পাওয়া ১৫৫ পয়েন্টকে ছাপিয়ে যাবে আজকের সূচক।কিন্তু দিনেরদেড় ঘন্টার মধ্যে সূচক কমে যায় ৯৭ পয়েন্ট।বেলা ১২ টা থেকে আবার কিছুটা বেড়ে শেষ পর্যন্ত সূচক দাঁড়ায় ৬৬৬৮ পয়েন্টে যা আগের দিনের তুলনায় ৩৮ পয়েন্ট বেশি।

আগেরদিন(বুধবার)বেড়েছিলো ৩৬৫টি শেয়ারের দর।আর সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার বাড়লো ১৯৩টি কোম্পানির শেয়ারের দর।কমেছে ১৪৭ টি এবংঅপরিবর্তিত আছে ৩৯টির। এদিন সপ্তাহে প্রথম বারের মত লেনদেনের পরিমান এক হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়।এদিন লেনদেন হয়েছে ১হাজার ৬১কোটি ২০ লাখ ৬৬ হাজারটাকার শেয়ার।আগেরদিন বুধবার যার পরিমাণ ছিলো ৭৭৩ কোটি ১ লাখ টাকা।এর আগেইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর আগের দিন লেনদেন হয়েছিলো একহাজার কোটি টাকার উপর।টানা নয় কার্যদিবস পর ডিএসই দেখলো ১হাজারকোটি টাকালেনদেন

বাজার বিশ্লেষকদের মতে সপ্তাহের তৃতীয়দিন দর বৃদ্ধির আগে যারা শেয়ার কিনেছিলেন তারা তৃতীয় কার্যদিবসে এসে মুনাফা করতে পেরেছেনতাই শেয়ার ছাড়ারপ্রবণতা ছিলো।যার ফল স্বরুপ সকালে বিশালউত্থান হলেওবেলেশেষে কমেআসে।

অন্যদিকে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতেও আজকে দেখা যায় বিনিয়োগকারীদের চাপ।যা সপ্তাহের শুরুর দুইদিন ছিলো অনেক কম।বিএসসি’র হস্তক্ষেপে শেয়ার কেনায় আগ্রহ বেড়েছে।সেটি লেনদেনে স্পষ্ট।বিনিয়োগকারীরা সাধুবাদ জানিয়েছেন বিএসইসি গত দুইদিনে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে

পূঁজিবাজারে তিনদিনের এই উত্থানের পেছনেকাজ করেছে গত দুইদিনের নেওয়া বিএসইসির কিছু সিদ্ধান্ত।মঙ্গলবার বিএসইসি নির্দেশনা দেয় স্টাবিলাইজেশন ফান্ড থেকে একশ কোটি টাকা বিনিয়োগের।পাশাপাশি শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়।পরদিন বুধবার তারল্য বাড়াতে ব্যাংকগুলোর সাথে বিএসইসি।সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যেসব ব্যাংকের মূলধন ২৫ শতাংশের কম বিনিয়োগ আছে তারা আরো ২শতাংশ বিনিয়োগ বাড়াবে।এর পাশাপাশি ঘোষণা আসে ২০২১ সালে বাজারে তারল্য বাড়াতে ব্যাংকগুলোতে বিশেষ তহবিল করার যে সুযোগ দেওয়া হয় সেই তহবিলে যারা টাকা দেয় নি সে ব্যাংকগুলো টাকা দেবে।আবার টাকা দিলেও যারা বিনিয়োগে যায়নি তারা বিনিয়োগে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সপ্তাহের শেষদিন ব্যাংকখাতের ৩৩ টি কোম্পানির মধ্যে সূচক বেড়েছে ২৫টি কোম্পানির।সাধারণ বীমা খাতের ৪০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯টি কোম্পানির।বস্ত্র খাতের ৫৮ কোম্পানির মধ্যে ৩৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।

এদিন সর্বোচ্চ লেনদেহওয়া ১০টি কোম্পানি হলো বেক্সিমকো,ফরচুন,বিডিকম,বিএসসি,জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড,অরিয়ন ফার্মা,ইউনিয়ন ব্যাংক,অগ্নি সিস্টেম,ড্রাগন সুয়েটার আ্যন্ড স্পিনিং লিমিটেড,কুইন সাউথ লিমিটেড।

বিএসইসির হস্তক্ষেপে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসলেও বিনিয়োগকারীরা মনে করেন এভাবে পদক্ষেপ নিয়ে বাজারে সাময়িক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।তবে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং নিয়ন্ত্রন সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় আরো জোরালো করার দাবি করেন বিনিয়োগকারীরা।

(দ্য রিপোর্ট/ টিআইএম/১০ মার্চ,২০২২)