দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বাংলাদেশ টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট অভিনেত্রী ডলি জহুর তাঁর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও অন্যান্য সংস্থা কর্তৃক প্রাপ্ত পুরস্কার গুলো বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মিউজিয়ামের জন্য আজ দান করেন।

ডলি জহুর ১৯৫৫ সালে ১৭ জুলাই ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পড়াকালীন মঞ্চ নাটকের সাথে যুক্ত হন। ১৯৭৪-৭৫ সালে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একটি নাটকে অভিনয় করেন। এরপর নাট্যচক্রের সাথে যুক্ত হয়ে মঞ্চে প্রথম লেট দেয়ার বি লাইট নাটকে অভিনয় করেন।

ডলি জহুর ১৯৭৬ সালের ৫ নভেম্বর জহুরুল ইসলামকে বিয়ে করেন।স্বামী জহুরুল ইসলামের সাথে যুক্ত হন কথ্যক নাট্যগোষ্ঠীতে। মামুনুর রশীদের বাংলা থিয়েটারে মানুষ নাটকে কিছুদিন অভিনয় করেন। আরণ্যক নাট্যদলের সাথে যুক্ত হয়ে মঞ্চে ময়ূর সিংহাসন ও ইবলিশে অভিনয় করেন।

১৯৮৫ সালে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত মোস্তাফিজুর রহমান প্রযোজিত বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রথম এইসব দিনরাত্রি নাটকে নিলু ভাবী চরিত্রের অভিনয় করে তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করেন।

আব্দুল লতিফ বাচ্চু পরিচালিত ১৯৮৩ সালে প্রথম নতুন বউ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯২ সালে হুমায়ূন আহমেদের কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্য নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের পরিচালনায় পূর্ণদৈর্ঘ্য ‘শঙ্খনীল কারাগার’ চলচ্চিত্রে রাবেয়া চরিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।

ডলি জহুর টেলিভিশন নাটকের পাশাপাশি প্রায় দেড়শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০০৬ সালে ঘানি চলচ্চিত্রে দারিদ্র্যপীড়িত রোকেয়ার অবরুদ্ধ জীবনের পোড়খাওয়া এক নারীর চরিত্রে মর্মস্পর্শী অভিনয় করে পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

এই অসাধারণ অভিনেত্রী তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও একাধিকবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি কর্তৃক পুরস্কার, যায়যায় দিন প্যাসিফিক পুরষ্কার, চিপাচস পুরস্কার, একতা অ্যাওয়ার্ড, কালচারাল রিপোর্টাস পুরস্কারসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে বেশ কিছু পুরস্কার পান।

ডলি জহুর বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক প্রাপ্ত পুরস্কার গুলো আজ (১৬ মার্চ) বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক ও পরিচালকের নিকট হস্তান্তর করেন।

বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ বিশিষ্ট অভিনেত্রী ডলি জহুরের জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি ডকুমেন্টেশন তৈরি করে সংরক্ষণ করেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গবেষণার জন্য।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৬ মার্চ, ২০২২)