ডমিঙ্গোকে নিয়ে খেলোয়াড়দের অভিযোগ আছে: মাশরাফি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আবারো বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে নিয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার সমালোচনা। বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়কের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকান কোচকে নিয়ে খেলোয়াড়দের অভিযোগ আছে। বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের পরিবেশও ভালো মনে হচ্ছে না তার।
চোট কাটিয়ে মাশরাফি মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার মিরপুরের একাডেমি মাঠে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের জার্সিতে অনুশীলন করেছেন। মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। কোচ হিসেবে ডমিঙ্গোকে মূল্যায়ন করতে বললে মাশরাফির মন্তব্য, ‘ও কী কাজ করেছে, সেটা তো আমি জানি না। দল যখন সফল হবে অবশ্যই সেটা তার কৃতিত্ব। এটা খুব স্বাভাবিক ইস্যু। আমি ওর সঙ্গে কাজ করিনি। তিনটা ম্যাচ শুধু, তাই কথা বলার সুযোগ কম। তবে যত ম্যাচ আমরা হেরেছি সেই দায়টাও তাকে নিতে হবে। আমরা অনেক ম্যাচ এখানে (মিরপুরে) হেরেছি, যেগুলো হারার কথা ছিল না। নিউ জিল্যান্ডে যেটা জিতেছি, সেটা আমাদের জেতার কথা ছিল না। এরকমও আছে।’
তিনি বলে গেলেন, ‘সব মিলিয়ে আমি মনে করি… দেখা যাক সামনে কতদূর থাকে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, ব্যর্থতার পাল্লাটা ওর বেশি ভারি। কারণ বাংলাদেশ দল ওই সময়ের মধ্যে নেই যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। এখন বাংলাদেশের যারা দর্শক আছে, তারা সফলতা চায়। আপনারা ও ক্রিকেট বোর্ড সফলতা চায়। সেখানে নতুন কোচ এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জায়গা এটা না। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এখন পারফরম্যান্স করার সময়। ওয়ানডে ক্রিকেটে কিন্তু সব মিলিয়ে ৬-৭ বছর ভালো পারফর্ম করে আসছে। অন্য ফরম্যাটগুলোতেও কিন্তু একই অবস্থা।’
অতীতের পরিসংখ্যান ভালো না হলেও মাশরাফি আশাবাদী, ‘আমরা ঘরের মাঠে যেসব ম্যাচ হেরেছি, শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আফগানিস্তানের সঙ্গে টেস্ট ম্যাচ… অনেক কিছুই আছে। আমি মনে করি এখন পর্যন্ত ওর পারফরম্যান্স খারাপের দিকেই বেশি। দেখা যাক দক্ষিণ আফ্রিকায় যদি অসাধারণ কিছু করে আসে… ওর সংস্কৃতি, ও পরিবেশ জানে, উইকেট সম্পর্কে ভালো ধারণা। আশা করছি ও একটা বড় ভূমিকা পালন করবে। সেটা করতে পারলে খুবই ভালো হবে।’
সামনে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। ২০২৩ সালে ভারতে খেলবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। পরপর দুইটি বিশ্বকাপ সামনে রেখে কোচ পরিবর্তন হওয়া উচিত কি না প্রশ্নে মাশরাফির উত্তর, ‘এটা তো আসলে বিসিবির সিদ্ধান্ত। আমার কাছে মনে হয়েছে তাই বলছি, এখন পর্যন্ত ওর ব্যর্থতার পাল্লা ভারি বেশি।’
ড্রেসিংরুমের পরিবেশ নিয়ে সন্দিহান সাবেক এই পেসার, ‘সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তাকে নিয়ে খেলোয়াড়দের অভিযোগ আছে। প্রথম যে বিষয়, সেটা হচ্ছে আপনার ড্রেসিংরুমে খুশি থাকা। সেটা যদি থেকে থাকে তাহলে ভালো। আমার কাছে সেটা (ড্রেসিংরুম খুশি) মনে হয়নি। এজন্য খোলা মনে বললাম এটা। রাসেল ডমিঙ্গোর বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাফল্যের পাল্লা বেশি ভারি নয়। স্টিভ রোডস বাদ যাওয়ার পরও তার সাফল্যের পাল্লা ভারি ছিল। বিসিবি যদি তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে তাহলে খুব ভালো। এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত।’
২০১৯ সালের ৭ আগস্ট বিসিবিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। বিসিবির হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের (এইচপি) কোচ হিসেবে সাক্ষাৎকার দিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন এ দক্ষিণ আফ্রিকান। তার প্রোফাইলে উচ্ছ্বসিত হয়ে বিসিবি থেকে দেওয়া হয় জাতীয় দলের কোচ হওয়ার প্রস্তাব। বেতন ধরা হয় মাসিক ১৫ হাজার ডলারের মতো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এখন তার বেতন প্রায় ২৫ হাজার ডলার।
ডমিঙ্গোর অধীনে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৭২ ম্যাচ খেলে ৩৪টি জিতেছে, হেরেছে ৩৭টি। টেস্টে ১৪ ম্যাচ খেলে তিনটি জয়, ওয়ানডেতে ১৮ ম্যাচে জয় ১৩টি ও টি-টোয়েন্টিতে ৪০ ম্যাচে ১৮টি।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৭ মার্চ, ২০২২)