দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ভলাকূট ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর মিঞা চৌধুরী সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তিনি বরখাস্ত হলেন।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রমতে, ভূমিসংক্রান্ত সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত এসংক্রান্ত একটি চিঠিতে বরখাস্তের কথা উল্লেখ আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি ঘুষের টাকা টেবিলের ওপর রেখে আলমগীর মিঞা এর ফিরিস্তি তুলে ধরেন। ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে তিনি বলছেন, 'টাকা তিনি একা নেন না। অনেককে দিতে হয়। এমনকি এসিল্যান্ড নেন। সরকার একটা আইন করে রাখলেও এটাই স্টাইল।' দুই মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আলমগীর মিঞা তাঁর নিজ কার্যালয়ে বসে কাজের বিনিময়ে টাকা দাবি করে এর ব্যাখ্যা দেন। ঘুষ হিসেবে পাওয়া পাঁচ শ টাকার নোট দেখিয়ে তিনি বলেন, 'এখান থেকে আমি দু শ টাকা পাব।'

এদিকে উপজেলার ভলাকূট এলাকার শামীম মিয়া নামে এক যুবক ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর মিঞা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সেবাপ্রত্যাশীদের নাম প্রস্তাব, সার্ভে রিপোর্ট, নামজারি, ডিসিআর সংগ্রহ, মিসকেস ও খাজনা দাখিল থেকে শুরু করে সবকিছুতেই টাকা দিতে হয় আলমগীরকে। অভিযোগের পরের দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘুষ গ্রহণ ও ঘুষ দরকষাকষির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।

লিখিত অভিযোগ ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ২ মার্চ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় থেকে ওই ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ৩ মার্চ কারণ দর্শানোর লিখিত জবাব দেন অভিযুক্ত আলমগীর। লিখিত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।

পরে গত ১৩ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ভলাকূট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর মিঞা চৌধুরীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা-২০০৮) এর বিধি (১২ অনুযায়ী) ১৩ মার্চ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। আরো উল্লেখ করা হয়, বিধিমোতাবেক বরখাস্তকালীন খোরপোষ ভাতা পাবেন।

তবে আলমগীর মিঞা চৌধুরী শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, এডিট করে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৮ মার্চ, ২০২২)