নানা অসঙ্গতিতে ঠাসা ফু-ওয়াং ফুডসের আর্থিক প্রতিবেদন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফু-ওয়াং ফুডসের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ম্যাবস অ্যান্ড জে পার্টনার্স। কোম্পানিটি ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত আয়, ইনভেন্টরি, ডেফার্ড ট্যাক্সের ব্যয় ও দায়, ব্যয়বহুল পরিচালনা, অগ্রিম লেনদেন, কাঁচামাল ও মেশিনারিজের বিষয়ে সঠিক নথিসহ ব্যাখ্যা প্রদান করতে পারেনি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষক।
ফলে কোম্পানিটির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনকে অযাচাইকৃত এবং অবমূল্যায়িত বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সহায়ক নথিসহ কোম্পানির অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
সম্প্রতি খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ফু-ওয়াং ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। একইসঙ্গে বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিআরওকে জানানো হয়েছে।
বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদন যাচাই করার পর এবং বৈধ নিরীক্ষকের যোগ্য মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনের বেশ কিছু বিষয়ে দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। নিরীক্ষকের প্রদান করা তথ্য থেকে জানা গেছে, কোম্পানিটির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে ৮৯ কোটি ৬০ লাখ ১৪ হাজার ৩৫৮ টাকার মোট বিক্রয়ের বিষয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো সঠিক হিসাব বই এবং সহায়ক নথি (যেমন চালান ও বিক্রয় বই) নিরীক্ষকের কাছে উপস্থাপন করা হয়নি। সুতরাং আর্থিক প্রতিবেদনে বিক্রয় ও আয় অবমূল্যায়ন বা বেশি করে দেখানো হতে পারে।
এছাড়া কোম্পানিটির ব্যবসা ও অন্যান্য প্রাপ্যের পরিমাণ ৫৩ কোটি ১৫ লাখ ৯৫ হাজার ৮১ টাকা, কিন্তু এর মধ্যে ৩২ কোটি ৪০ লাখ ২৬ হাজার ১৩৫ টাকার বিষয়ে নিরীক্ষক নিশ্চিত করতে পারেনি। কারণ কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ উল্লেখিত টাকার বিষয়ে কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারে নাই।
এদিকে নিরীক্ষক ৩ কোটি ২৯ লাখ ৪ হাজার ৪৪০ টাকার বিষয়ে নিশ্চিত করতে দেনাদারদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। কিন্তু নিরীক্ষক ২ কোটি ৯০ লাখ ৫৮ হাজার ৮৩২ টাকা দেনাদারদের কাছ থেকে কোনো সাড়া পায়নি। সুতরাং, আর্থিক প্রতিবেদনে অযাচাইকৃত এবং অনিশ্চিত পাওনার কথা বলা হতে পারে।
আর পৃথক আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটি ইনভেন্টরি বাবদ ২৮ কোটি ৩০ লাখ ৭৮ হাজার ৩৮১ টাকা উল্লেখ করেছে কোম্পানি। কিন্তু নিরীক্ষক যাচাই করতে যেয়ে ২০ কোটি ৫৭ লাখ ৮১ হাজার ২০ টাকা নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলস্বরূপ ক্লোজিং ইনভেন্টরি বেশি দেখানো হয়েছে।
সেই সাথে নিরীক্ষকের যোগ্য মতামতের ভিত্তিতে পাওয়া যায় যে, ডেফার্ড ট্যাক্সের ব্যয় বাবদ ২৬ লাখ ৭৩ হাজার ৩২৯ টাকা এবং ডেফার্ড ট্যাক্স দায় বাবদ ৭ কোটি ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৪১৯ টাকা দেখানো হয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ মূল্যায়ন করে ফলাফল দাঁড়ায় ২ কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার ৪৩৩ টাকা এবং ৯ কোটি ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৫৮৯ টাকায়। অতএব, আর্থিক প্রতিবেদনে ডেফার্ড ট্যাক্সের ব্যয় এবং ডেফার্ড ট্যাক্সের দায় অবমূল্যায়ন হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/ টিআইএম /২০ মার্চ,২০২২)