দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বার্সেলোনা কী করতে পারে সেটা দেখানোর উপযুক্ত মঞ্চ ক্লাসিকো- কোচের এমন উজ্জীবনী বার্তায় জেগে উঠল পুরো দল। খেলল অবিশ্বাস্য সুন্দর ফুটবল। দখল নিল মাঝমাঠের, আক্রমণভাগ হয়ে উঠল বিধ্বংসী। খেই হারানো রিয়াল মাদ্রিদ কোনো জবাব খুঁজে পেল না। ক্লাসিকোয় চিরপ্রতিদ্বন্দীদের উড়িয়ে কাতালান ক্লাবটি যেন দিল বার্তা- পালাবদলের অধ্যায় শেষ, নতুন মোড়কে ফিরছে পুরনো বার্সেলোনা।

ম্যাচের আগে যে ফল কেউ ভাবতে পারেনি, সেটাই স্কোরলাইনে ধরা দিল। বিস্ময়ের সব মাত্রা ছাপিয়ে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গোল উৎসব করল বার্সেলোনা। রিয়ালকে গুঁড়িয়ে দিল ৪-০ গোলে।

ম্যাচের কর্তৃত্ব আগেই বুঝে নেওয়া বার্সেলোনা প্রথম গোলের দেখা পায় ২৯ মিনিটে গিয়ে। উসমান দেম্বেলের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াং, রিয়ালের বিপক্ষে আগের ছয় ম্যাচে যার গোল ছিল ছয়টি। এর আগেই অবশ্য গোলের দেখা পেয়ে যেতে পারত বার্সা, যদি ফেররান তরেস, দেম্বেলে, অবামেয়াংরা তিনটে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট না করে বসতেন।

এক গোলে পেছানো রিয়াল ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছে, তবে জেরার্ড পিকে, এরিক গার্সিয়াদের কাছে গিয়ে বারবার পরাস্ত হতে হয়েছে ভিনিসিয়াস জুনিয়রদের। বিরতির মিনিট সাতেক আগে উলটো আরও এক গোল করে ব্যবধান বাড়ায় বার্সা। কর্নার থেকে গোল করেন রোনাল্ড আরাউহো।

দুই গোলে পিছিয়ে বিরতিতে গেলেও রিয়ালের আশা তখনো শেষ হয়নি। সামগ্রিক লড়াইয়ে একই ব্যবধানে পিছিয়ে ম্যাচ জেতার নজির তো দলটা গড়েছিল এক ম্যাচ আগেই। তবেবড় একটা পার্থক্য ছিল বৈকি! পিএসজির বিপক্ষে সেই ম্যাচের নায়ক কারিম বেনজেমা যে ছিলেন না! তার অনুপস্থিতিতে রিয়ালের দেহভাষ্যে ফারাকটা চোখে পড়ছিল বেশ।

সেটারই ফায়দা নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আরও এক গোল করে বসে বার্সা। অবামেয়াংয়ের পাস থেকে এবার গোলটা করেন ফেররান তরেস। সেই গোলের পাঁচ মিনিট পর রক্ষণ থেকে পিকের বাড়ানো বল আয়ত্বে নিয়ে তরেস গোলমুখে বল বাড়ান অবামেয়াংকে। তার লব করা বল গিয়ে জড়ায় রিয়ালের জালে। শুরুতে অফসাইডের অজুহাতে গোল না দিলেও ভিএআর পরখের পর গোলটা পেয়ে যায় বার্সা, এগিয়ে যায় ৪-০ গোলে। ম্যাচের বয়স তখন মোটে ৫২ মিনিট। সান্তিয়াগো বের্নাবিউয়ের দর্শকদের মনে তখন আরও বড় হারের শঙ্কা।

বার্সেলোনা শেষ দেড় মাসে পাঁচবার প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়েছে চার গোল। কে জানে সেই ধারাবাহিকতা রাখতেই কি-না, বার্সেলোনা এরপর গোল করার চেয়ে বেশি মনোযোগী হয় গোল আটকানোয়। তাতে সফলও হয়েছে বৈকি, মারিয়ানো ডিয়াজ, ভিনিসিয়াস, রদ্রিগোদের আটকে রেখেছে দারুণভাবেই। তাতেই ৪-০ গোলের অনবদ্য, অবিস্মরণীয় এক জয় এসে ধরা দেয় বার্সেলোনার হাতে। আর রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে জমা পড়ে আরও এক দুঃসহ স্মৃতি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২১ মার্চ, ২০২২)