দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ইউক্রেন রুশ সামরিক অভিযানের ঠিক এক মাসের মাথায় ন্যাটো সামরিক জোটের নেতারা ব্রাসেলসে বৃহস্পতিবার শীর্ষ বৈঠকে পূর্ব ইউরোপে জোটের দেশগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বৈঠকের পর জোটের মহাসচিব ইয়েন স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, পূর্ব ইউরোপে ৪০,০০০ অতিরিক্ত নেটো সৈন্য পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া এবং স্লোভাকিয়ায় ন্যাটো সেনা বহর মোতায়েন করা হবে।

ইউক্রেনে সেনা হামলার পেছনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রধান তাড়না ছিল ন্যাটো জোটকে একটি বার্তা দেওয়া যে পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার দোরগোড়ায় ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণ, সামরিক তৎপরতা তিনি আর বরদাস্ত করবেন না।

কিন্তু পূর্ব ইউরোপে আরো ৪০ হাজার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়ে পশ্চিমা সামরিক জোট কার্যত জানিয়ে দিল তারা মি. পুতিনের দাবির কোনো তোয়াক্কা করছে না।

মি. স্টলটেনবার্গ বলেন, দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের জন্য ন্যাটো প্রস্তুত।

বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর ন্যাটো জোটের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয় ইউরোপে 'এক প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা সঙ্কট মোকাবেলায়' এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ন্যাটো মহাসচিব বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর ইউরোপে নিরাপত্তার মানচিত্র আমূল বদলে গেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পশ্চিমা নেতাদের এই বৈঠকে কিয়েভ থেকে ভিডিও লিংকে বক্তব্য দিয়েছেন যেখানে তিনি ন্যাটোর কাছ থেকে 'অবাধ সামরিক সাহায্য' দাবি করেন। আবারো ইউক্রেনে 'নো ফ্লাই জোন' ঘোষণার দাবি না করলেও মি. জেলেনস্কি যুদ্ধ বিমান এবং ট্যাংক চেয়েছেন।

ন্যাটো ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান এবং ট্যাংক দেবে কিনা- এই প্রশ্নে সরাসরি উত্তর এড়িয়ে যান ন্যাটো মহাসচিব। তিনি বলেন, প্রতিরক্ষার জন্য ইউক্রেনকে সাহায্য দিয়ে যাবে ন্যাটো।

রাশিয়ার কাছ থেকে সাইবার হামলা এবং সম্ভাব্য রাসায়নিক-জীবাণু এবং পারমানবিক হামলার বিরুদ্ধেও ইউক্রেনকে সাহায্যের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ন্যাটোর বৈঠকে।

মি. স্টলটেনবার্গ বলেন, "রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার লড়াইয়ের প্রকৃতি পুরোপুরি বদলে দেবে। রাশিয়া সেটা করলে তা আন্তর্জাতিক আইনের চরম ব্যত্যয় হবে, এবং তার পরিণতি হবে সুদূরপ্রসারী এবং ব্যাপক।"

মি. স্টলটেনবার্গ বলেন, মস্কো এখন যেভাবে ইউক্রেন এবং তার মিত্র দেশগুলোর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য অভিযুক্ত করছে তা উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, এই অভিযোগ তুলে রাশিয়া আসলে তেমন অস্ত্র প্রয়োগের জন্য যুক্তি তৈরি করছে।

রাশিয়াকে আর্থিক বা সামরিক সহযোগিতা না দেওয়ার জন্যে ন্যাটোর পক্ষ থেকে চীনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

সুত্র: বিবিসি

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৫ মার্চ, ২০২২)