দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় মারামারির ঘটনায় রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীসহ পাঁচ বিজেপি বিধায়ককে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে বগটুইকাণ্ড নিয়ে বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি বিধায়কদের হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে সেখানে মারামারির ঘটনায় বিধায়কের রক্ত ঝরে।

এ ঘটনায় শুভেন্দু, দীপক বর্মণ, মনোজ টিগ্গা, নরহরি মাহাতো ও শংকর ঘোষকে বিধানসভা থেকে বরখাস্তের প্রস্তাব করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও উদয়ন গুহ। পরে ওই পাঁচ বিধায়ককে বিধানসভা থেকে বরখাস্ত করে দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক কতদিনের জন্য তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আজ প্রমাণ হয়ে গেল, বিধানসভার ভিতরেও বিরোধী নেতারা সুরক্ষিত নন’।

বিধানসভায় হাতাহাতির সময় ঘুষিতে নাক ফেটে যায় হুগলির চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই তার ওপর হামলা চালিয়ে নাক ফাটিয়ে দিয়েছেন।


কী ঘটেছিল বিধানসভায়?
বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুইয়ের নৃশংসতা নিয়ে সোমবার বিধানসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। সেই নৃশংস ঘটনা নিয়ে আলোচনার দাবি তুলতে থাকেন তারা। ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। এ সময় বিজেপি ও তৃণমূল বিধায়কদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। রীতিমতো তুলকালাম বেঁধে যায়। বিধায়করা ধস্তাধস্তি করতে থাকেন, যা হাতাহাতিতে গড়ায়।

ধস্তাধস্তির জেরে বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার পোশাক ছিঁড়ে যায়। তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের নাক ফেটে রক্ত ঝরে। তৃণমূলের অভিযোগ, অসিতকে বিধানসভার মেঝেতে ফেলে মারধর করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নারী বিধায়কদের হয়রানি করা হচ্ছিল। এ সময় প্রতিবাদ করায় শুভেন্দু তার নাকে ঘুষি মারেন।

ওই ঘটনার পর বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ করতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। শুভেন্দু দাবি করেন, অধ্যক্ষের সামনে প্রাথমিকভাবে বিজেপি বিধায়কদের আক্রমণ করেছে কলকাতা পুলিশের সাদা পোশাক পরা কর্মকর্তারা। তারপর তপন চট্টোপাধ্যায়, শওকত মোল্লাসহ আটজনের একটি দল বিজেপি বিধায়কদের ওপর হামলা চালিয়েছে। বিজেপি বিধায়কদের জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। কিল-ঘুষি মারা হয়েছে। রক্ষা পাননি নারী বিধায়ক চন্দনা বাউরি ও তাপসী মণ্ডলের মতো অনেকে।

শুভেন্দুর দাবি অস্বীকার করে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘এরা (বিজেপি) গুণ্ডামি করতে এসেছে। গুজরাট, উত্তরপ্রদেশে সন্ত্রাস করেছে। এখানেও সন্ত্রাস করছে। আমরাও বিরোধী ছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করতাম’।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৮ মার্চ, ২০২২)