ন্যাশনাল টিতে নতুন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:তালিকাভুক্ত কোম্পানি ন্যাশনাল টিতে অরো একজন সম্মানিত স্বতন্ত্র পরিচালককে মনোনয়ন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে কোম্পানিটিতে এ নিয়ে স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিনজন। ন্যাশনাল টিতে নতুন মনোনয়ন পাওয়া স্বতন্ত্র পরিচালক হলেন সাবেক বিভাগীয় বিশেষ জজ মিজানুর রহমান খান।
এই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। বিষয়টি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।
এর আগে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন ও বিনিয়োগকারীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাশনাল টিতে দুইজন সম্মানিত ব্যক্তিকে স্বতন্ত্র পরিচালককে মনোনয়ন দেয় বিএসইসি। কোম্পানিটিতে মনোনয়প্রাপ্ত স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন- বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. জাহিদুর রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. রাজিয়া বেগম।
বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করেছিল। তবে কোম্পানিটির করপোরেট সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আরো একজন স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে সাবেক বিভাগীয় বিশেষ জজ মিজানুর রহমান খানকে
মনোনয়ন দিয়েছে কমিশন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ হলো।
এর আগে গত বছরের ৬ অক্টোবর ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ন্যাশনাল টি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে স্বতন্ত্র পরিচালক বিগ্রেডিয়ার মো. জাহিদুর রহমান ও অধ্যাপক ড. রাজিয়া বেগমের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই দিন থেকেই তারা কোম্পানির পরিচালনার কাজে যুক্ত হন।
ডিএসই’র প্রতিবেদন ও বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ন্যাশনাল টি কোম্পানির বিরুদ্ধে বার্ষিক প্রতিবেদনে করপোরেট গভর্নেন্স কোড লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে বেশ কিছু বিনিয়োগকারী কমিশনে অভিযোগও করেছেন।
তথ্য মতে, ন্যাশনাল টির ওয়েবসাইটে নমিনেশন অ্যান্ড রেমুনারেশন কমিটি (এনআরসি) কর্তৃক নির্ধারিত চেয়ারম্যান, অন্যান্য পর্ষদ সদস্য এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) জন্য কোড অব কন্ডাক্ট (আচরণবিধি) প্রকাশ করা হয়নি। ফলে কোম্পানিটি বিএসইসির করপোরেট গভর্নেন্স কোড, ২০১৮ এর শর্ত ১( ৭)(বি) লঙ্ঘন করেছে। এছাড়া ২০২০ সালের ৩০ সমাপ্ত হিসাব বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কোম্পানিটি করপোরেট গভর্নেন্স কোডের শর্ত ৫(৪)(এ) অনুযায়ী অডিট কমিটি আর্থিক বছরে ৪টি সভা আয়োজন করেছে বলে জানিয়েছে। তবে প্রকৃত পক্ষে কোম্পানিটি মাত্র তিনটি সভা করেছে। ফলে কোম্পানিটি করপোরেট গভর্নেন্স কোডের শর্ত ৫(৪)(এ) লঙ্ঘন করেছে। তাই সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে বিএসইসি ন্যাশনাল টি কোম্পানিতে দুইজন স্বতন্ত্র পরিচালক মনোনয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ন্যাশনাল টি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান বলেন, ‘সাবেক বিভাগীয় বিশেষ জজ মিজানুর রহমান খান স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি কাজ শুরু করেছেন।’
প্রসঙ্গত, ন্যাশনাল টি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৭৯ সালে। ‘এ’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির মোট পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৬৬ লাখ। এর মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকের হারে ৪৮.৬০ শতাংশ, সরকারের হাতে ৪.৩৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৮.৫৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৮.৫২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে।গতকাল মঙ্গলবার ২৯ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৭৪৯.৭০ টাকা থেকে ৭৬৫.০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছে। সর্বশেষ ৭৫১.১০ টাকায় শেষ হয় লেনদেন।
(দ্য রিপোর্ট/ টিআইএম/২৯ মার্চ,২০২২)