দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: টাইগার বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রোটিয়ারা আটকে যায় ৩৬৭ রানে। জবাব দিতে নেমে ভালো শুরুর আভাস দিলেও সাদমান ইসলামকে ফিরিয়ে সেটা হতে দেননি সাইমন হার্মার। এরপর অবশ্য মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্তর জুটিতে ঘুরিয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, তাদের দুজনের জুটিতে দুর্দান্ত দিন শেষের অপেক্ষা করছিল টাইগার সমর্থকরা। তবে শেষ বিকেলে বাংলাদেশের সুন্দরতম দিনটা কেড়ে নিয়েছেন হার্মার। সাদমানের পর ডানহাতি অফ স্পিনার একে একে ফিরিয়েছেন শান্ত, মুমিনুল হক এবং মুশফিকুর রহিমকে। হার্মারের ৪ উইকেটের দিনে চার ব্যাটারকে হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯৮ রান। তাতে দ্বিতীয় দিন শেষে প্রোটিয়াদের চেয়ে ২৬৯ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৩৬৭ রানের জবাব দিতে নেমে ভালো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন মাহমুদুল হাসান জয় এবং সাদমান। তবে তাদের দুজনের জুটি বড় হতে দেননি সাইমন হার্মার। নিজের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে শুরুটা দারুণ করলেন। ডানহাতি এই স্পিনারের গুড লেংথ বলে বোল্ড হয়েছেন ৯ রান করা সাদমান। বাঁহাতি এই ব্যাটারের বিদায়ের পরই চা বিরতিতে যায় দুদল।

চা বিরতি থেকে ফিরে নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন জয়। এদিন শুরু থেকেই খানিকটা আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকেন শান্ত। যদিও সময় যত গড়িয়েছে ততই ধীরগতিতে খেলতে শুরু করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। হার্মারের বলে ছক্কা মেরে পঞ্চাশ রানের জুটি পূর্ণ করেন শান্ত। তবে এরপরই সাজঘরে ফেরেন তিনি।

সাদমানের পর হার্মারের বলে বোল্ড হয়েছেন শান্তও। বাঁহাতি এই ব্যাটার ফিরেছেন ৩৮ রানে। থিতু হতে পারেননি মুমিনুল হক। শেষ বিকেলে আক্ষেপ বাড়িয়ে শূন্য রানে ফিরেছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। ব্যর্থ হয়েছেন আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। হার্মারের বলে উইকেটকিপার কাইলে ভেরেইনে গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ৭ রানে আউট হয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এরপর অবশ্য নাইট ওয়াচম্যান তাসকিন আহমেদকে নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছেন জয়। ডানহাতি এই ব্যাটার অপরাজিত রয়েছেন ৪৪ রানে।

এর আগে ডারবানে দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নেমে ১২ রান যোগ করতেই উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। খালেদ আহমেদের গুড লেংথের বল লাইন মিস করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন কাইল ভেরেইনে। রিভিউ নিলেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা হয়নি এই উইকেটকিপার ব্যাটারের। ডানহাতি এই ব্যাটার আউট হয়েছেন ২৮ রান।

পরের বলে উইয়ান মুল্ডারকেও ফেরান খালেদ। ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের গুড লেংথের বলে গালিতে ক্যাচ তুলে দেন মুল্ডার। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটা দারুণভাবে লুফে নেন মাহমুদুল হাসান জয়। পরের ওভারে ফিরতে পারতেন টেম্বা বাভুমাও। বাংলাদেশ রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলে বেঁচে যান ডানহাতি এই ব্যাটার।

এরপর কেশভ মহারাজকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন বাভুমা। তাদের দুজনের জুটি থেকে ৫৩ রান। বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে ওঠা বাভুমাকে ফিরিয়ে তাদের জুটি ভাঙেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ডানহাতি এই স্পিনারের লেংথ বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন বাভুমা।

মাত্র ৭ রানের জন্য ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া করে ৯৩ রানে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। যদিও আরও আগেই ফিরতে পারতেন বাভুমা। এবাদতের বলে ব্যক্তিগত ৭৭ রানে থাকা বাভুমার ক্যাচ ছাড়েন ইয়াসির আলী রাব্বি। পরের ওভারে বাভুমাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেয়া মহারাজকে ফেরান এবাদত।

ডানহাতি এই পেসারের ফুলার লেংথ বলে বোল্ড হয়েছেন মহারাজ। মূলত ব্যাট-প্যাডের মাঝে গ্যাপ থাকাতেই ১৯ রানে আউট হয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে ৪ উইকেটে ৮১ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাতে মধ্যাহৃ বিরতির আগে বল হাতে দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশের বোলাররা।

মধ্যাহৃ বিরতি থেকে ফিরে লিজাড উইলিয়ামসকে ফিরিয়েছেন খালেদ। গালিতে দাঁড়িয়ে আরও একবার দারুণ এক ক্যাচ লুফে নিয়েছেন জয়। তবে শেষ জুটিতে সাইমন হার্মার এবং ডোয়াইন অলিভার মিলে যোগ করেন ৩৫ রান। অলিভারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৬৭ রানে অল আউট করে বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে মিরাজ তিনটি, খালেদ চারটি এবং এবাদত দুটি উইকেট নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা- ৩৬৭/১০ (১২১ ওভার) (এলগার ৬৭, বাভুমা ৯৩, এরউই ৪১, হার্মার ৩৮*, খালেদ ৩/৯২, মিরাজ ৩/৯৪)

বাংলাদেশ- ৯৮/৪ (৪৯ ওভার) (জয় ৪৪*, শান্ত ৩৮, সাদমান ৯, হার্মার ৪/৪২)

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১ এপ্রিল, ২০২২)